বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় আক্কেলপুর পৌর এলাকার আমুট্ট জামে মসজিদ চত্বরে এক অনুষ্ঠান করে ওই ১২ মাদক বিক্রেতা ও তাদের পরিবারের মাঝে রিকশা ও সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়।
মাদক মুক্তকরণ ও মাদক বিক্রেতা পুর্নবাসন বিষয়ে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে আক্কেলপুর থানার ওসি আশরাফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন, এএসপি (সার্কেল) বিমান চন্দ্র কর্মকার, উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কমল, পৌর মেয়র আলমগীর চৌধূরী বাদশা এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সাদেকুর রহমান সাদেক বক্তব্য রাখেন।
পরে আক্কেলপুর থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এ এলাকাকে মাদকমুক্ত করণে স্থানীয় মাদক বিক্রেতাদের পুর্নবাসনের পরিকল্পনা করে আক্কেলপুর থানা।
এ কাজে পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আর্থিক সহায়তা দেয়, যার মাধ্যমে ওই ১২ জন নারী ও পুরুষের মাঝে রিকশা ও সেলাই মেশিন কিনে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া এসব পরিবারের স্কুল-কলেজগামী ছেলেমেয়েদের শিক্ষা সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ওসি আশরাফুল আরও জানান, পুর্নবাসন কাজের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে দুজনকে একটি বিশেষায়িত ব্যাংক ও একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া বিভিন্ন এনজিওতে থাকা ওই পরিবারগুলোর ঋণের সুদ মওকুফের ব্যবস্থা করেছে আক্কেলপুর থানা পুলিশ।
অনুষ্ঠানের উন্মুক্ত আলোচনায় মিনি পারভীন, ছবি খাতুন, জনি মিয়াসহ পুর্নবাসিত এক সময়ের মাদক বিক্রেতারা বলেন, তাদের মধ্যে কেউ পেটের দায়ে, কেউ এনজিওদের ঋণের লাগামহীন সুদ পরিশোধ করতে, কেউ সন্তানদের লেখাপড়াসহ ভরণ-পোষণ আবার কেউ বা স্বভাব দোষে মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন।
এ কাজ করতে গিয়ে তাদের ওপর মামলা হয়েছে, অনেকে অনেক বার জেল-হাজত খেটেছেন। এ ছাড়া নানাভাবে পুলিশের ভয়-ভীতির মধ্যেও থাকতে হতো।
প্রথমবারের মতো এ পথ ছেড়ে আত্ম-কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়ায় পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান এক সময়ের এসব মাদক বিক্রেতা।
ওসি আশরাফুল বলেন, এ উপজেলায় পর্যায়ক্রমে মাদক ও মাদক বিক্রেতাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করাসহ মাদক নির্মূলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।