পদোন্নতির জন্য ঘুষের তহবিল, ১০ পুলিশ বরখাস্ত

বরিশাল মহানগর পুলিশের বিভিন্ন পদে পদোন্নতির জন্য ‘ঘুষের তহবিল’ সংগ্রহের অভিযোগে ১০ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে পুলিশ সদরদপ্তর।

বরিশাল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 June 2015, 04:28 PM
Updated : 30 June 2015, 04:28 PM

এক বছর আগে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার পরও পদোন্নতি হচ্ছিল না বিএমপিতে কর্মরত ২৩০ পুলিশ সদস্যের।

পদোন্নতির আশায় ওই পুলিশ সদস্যের কাছ থেকে টাকা তুলে বরখাস্ত ১০ জন ‘ঘুষের তহবিল’ গঠন করেছিলেন বলে বাহিনীর নিজস্ব তদন্তে বের হয়ে এসেছে।

বিএমপি কমিশনার শৈবাল কান্তি চৌধুরী জানান, এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি তহবিল গঠনের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পর জড়িত ১০ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করে।

বরখাস্ত পুলিশ সদস্যরা হলেন - এএসআই আনিসুজ্জামান, মনির হোসেন ও হানিফ, নায়েক কবির হোসেন, গাড়ি চালক শহীদুল ইসলাম, বাবলু জোমাদ্দা ও দোলন বড়াল, কনস্টেবল তাপস কুমার এবং রেশন স্টোরকিপার আব্বাস উদ্দিন ও আরিফুর রহমান।

পুলিশ সদর দপ্তর থেকে অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (শৃঙ্খলা) মো. আলমগীর স্বাক্ষরিত তাদের বরখাস্তের আদেশ ফ্যাক্স যোগে সোমবার বরিশালে পৌঁছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন বিএমপি কমিশনার শৈবাল।

শৈবাল বলেন, পুলিশের বিভিন্ন পদে পাঁচ হাজার ৯০ জন জনবল চেয়ে অনেক আগে পুলিশ সদরদপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে ৮০৫টি পদ সৃষ্টি হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে নিয়োগ দেয়নি সদরদপ্তর।

একবছর আগে পদোন্নতি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের কয়েকজন মন্ত্রণালয়ে উৎকোচ দিয়ে ওইসব পদে নিয়োগ পেতে গোপনে সবার কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহ করছিলেন বলেও জানান তিনি।

“তারা এএসআই থেকে এসআই, নায়েক থেকে এএসআই এবং কনস্টেবল থেকে নায়েক পদে পদোন্নতির কথা বলে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়, যার মাধ্যমে মোট ৭৭ লাখ টাকার ওই অবৈধ তহবিল গঠিত হয়।”

বরিশাল মহানগর পুলিশের প্রধান কর্মকর্তা শৈবাল বলেন, টাকা রাখার জন্য ডাচ বাংলা ব্যাংকের বরিশাল শাখায় এএসআই আনিসুজ্জামান, নায়েক কবির হোসেন ও চালক বাবলু জোমাদ্দার একটি যৌথ হিসেব খুলেন।

“৭৭ লাখ টাকার মধ্যে ১৭ লাখ টাকা ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রয়েছে। বাকি ৬০ লাখ টাকা বিএমপির উপ-কমিশনার জিললুল রহমানের কাছে জমা রাখা হয়েছে।”

তিনি বলেন, গত ১১ জুন ঢাকা সদর দপ্তরে গেলে তহবিল সংগ্রহের বিষয়টি তাকে জানানো হয়। এরপর ১৩ জুন বরিশালে ফিরে উপ-কমিশনার শোয়েব আহমেদকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

এর মধ্যে ঘটনার আরও খোঁজখবর নিয়ে ১৭ জুন আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করে পুলিশ সদরদপ্তরের নিরাপত্তা সেল।

বরখাস্ত হওয়া ওই ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ঘুষের জন্য তহবিল গঠনের বিষয়টি তদন্ত কমিটির কাছে স্বীকার করেছেন। পরে তাদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।

তহবিলের টাকা নিজের কাছে জমা রাখার বিষয়ে জানতে উপ-কমিশনার জিললুর রহমানের সরকারি মুঠোফোনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ধরেননি।

এদিকে পুলিশ কমিশনারের করা তদন্ত কমিটির প্রধান উপ-কমিশনার শোয়েব আহমেদ জানিয়েছেন, তদন্তের কাজ প্রায় শেষের দিকে। ২/১ দিনের মধ্যে পুলিশ কমিশনারের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আশা করছেন তিনি।