শরীয়তপুর পৌর মেয়রসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে পরোয়ানা

শরীয়তপুরে একটি স্কুলের জমি বিক্রির টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের করা মামলায় পৌর মেয়র আ. রব মুন্সিসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।

শরীয়তপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 June 2015, 12:05 PM
Updated : 30 June 2015, 12:05 PM

শরীয়তপুর জেলা ও দায়রা জজ মো. আতাউর রহমান মঙ্গলবার পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। 

সদর উপজেলার আঙ্গারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের তিন একর ৭১ শতক জমি বিক্রির টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ওই মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।

পরোয়ানা পাওয়া আসামিরা হলেন, বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আ. রব মুন্সি, সদস্য সচিব ও প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন কামাল, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আ. সালাম হাওলাদার, উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা মজিবুর রহমান হাওলাদার, বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আইউব আলী মল্লিক, আ. কুদ্দুস মোল্লা, বেগম আলফাতুন্নেছা, শিক্ষক সুজন সাহা, সংগীতা সাহা, রনজিৎ কুমার সাহা এবং জমির ক্রেতা জাহাঙ্গীর আলম ও আব্দুস সালাম।

রব শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র এবং সালাম হাওলাদার সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চিতলীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।

দুদকের আইনজীবী মীর শাহাবুদ্দিন উজ্জল বলেন, মঙ্গলবার মামলায় শুনানির নির্ধারিত দিনে আসামিরা আদালতে হাজির না হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে সময় আবেদন করেন। আদালত তা নাকচ করে সব আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

একইসঙ্গে বিচারক  আগামী ১৩ জুলাই মামলা শুনানির পরবর্তী দিন রেখেছেন বলে ওই আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর্জা হজরত আলী জানান।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, শরীয়তপুর সদরের আংগারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের তিন দশমিক ৭১ শতাংশ জমি, যার বাজার দর চার কোটি ৫৭ লাখ ৪২ হাজার ৪৪৫ টাকা, বিক্রির জন্য ২০১২ সালের  ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করেন প্রধান শিক্ষক আনোয়ার কামাল।

তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নামমাত্র মূল্য দেখিয়ে দরপত্র দাখিল করে।

তাদের মধ্যে জে সরদার কর্পোরেশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগসাজস করে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি  মাত্র এক কোটি ৫০ লাখ টাকায় জমি  বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়।

সে মোতাবেক একই বছরের ৩০ ডিসেম্বর প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন কামাল দাতা হিসেবে জে সরদার কর্পোরেশনের মালিক জাহাঙ্গীর আলম ও তার ভাই আব্দুস সালামের নামে জমি রেজিস্ট্রি করে দেন।

কিন্তু জমি বিক্রির টাকা বিদ্যালয়ের তহবিলে জমা দেওয়া হয়নি।

জমি বিক্রির দলিল রেজিস্ট্রি হওয়ার ২ মাস ১৮ দিন পর গ্রহীতারা ৭০ লাখ টাকা ও ৮০ লাখ টাকার দুটি চেক দেন।

কিন্তু চেকে দেওয়া স্বাক্ষরের সঙ্গে ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট মালিকের স্বাক্ষর না মেলায় এবং জমি গ্রহীতার ব্যাংক হিসাব নম্বরে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় চেক দুটি প্রত্যাখ্যাত হয়।

পরবর্তীতে বিষয়টি জানতে পেরে দুর্নীতি দমন কমিশন ফরিদপুর তদন্ত করে এবং ২০১৪ সালের ৬ অগাস্ট দুদকের উপ-পরিচালক মলয় কুমার সাহা বাদী হয়ে পালং মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।তদন্তের পর গত ২৮ মে ১২ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক।