সেতু ভেঙে পড়া তেলের বগি দুটি উদ্ধার

বোয়ালখালীতে রেলসেতু ভেঙে খালে ডুবে থাকা তেলবাহী ট্রেনের দুটি ওয়াগন দুর্ঘটনার ১০ দিন পর পুরোপুরি উদ্ধার হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 June 2015, 05:30 PM
Updated : 29 June 2015, 05:30 PM

মঙ্গলবার চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেললাইনে ২৪ নম্বর সেতু দিয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু করা যাবে বলেও আশা করছেন তারা।

এদিকে, ফার্নেস তেলের সংকটের কারণে দোহাজারী ১০০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টের বিদ্যুৎ উৎপাদনের সময় কমিয়ে প্রতিদিন ১০ ঘন্টার পরিবর্তে দুই থেকে তিন ঘণ্টা করা হয়েছে।

পূর্ব রেলের চিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হারুণ অর রশিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সোমবার বিকালে খালের পানিতে ডুবে থাকা দ্বিতীয় ওয়াগনটি উদ্ধার করে ডাঙায় তোলা হয়েছে। মঙ্গলবার কাত হয়ে পড়া ইঞ্জিনটি উদ্ধার করা হবে।

এর আগেই কাত হয়ে থাকা অন্য ওয়াগনটি উদ্ধার করা হয়েছিল বলেও জানান তিনি।

গত ১৯ জুন দুপুরে চট্টগ্রামের দোহাজারী পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য ফার্নেস তেল নিয়ে যাওয়ার সময় বোয়ালখালীর খিতাপচরের ২৪ নম্বর রেলসেতু ভেঙে দুর্ঘটনায় পড়ে তেলবাহী ট্রেনটি।

দুর্ঘটনায় ট্রেনটির আটটি ওয়াগনের মধ্যে দুটি বোয়ালখালী খালে সম্পূর্ণ ডুবে যায়। এছাড়া ইঞ্জিন ও আরেকটি ওয়াগন অর্ধেক পানিতে ডুবে ছিল।

ওয়াগনের তেল খালের পানির মাধ্যমে কর্ণফুলী ও হালদা নদীতে ছড়িয়ে পড়ে।

মাঈনুদ্দিন স্যালভেজ নামক বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় ওয়াগন দুটি পানি থেকে উদ্ধার করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।  

বিদ্যুৎ কেন্দ্রে মঙ্গলবার তেল সরবরাহের আশা

ট্রেন দুর্ঘটনার পর পূর্ব রেলের কর্মকর্তারা সাত দিনের মধ্যে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করার কথা বললেও ১০ দিন ধরে তা বন্ধ রয়েছে।

এদিকে, যেখানে একদিন অন্তর দোহাজারী পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য ফার্নেস তেল সরবরাহ করা হতো সেখানে ১০দিন ধরে তা বন্ধ আছে। কমেছে প্ল্যান্টে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সময়কালও।

পূর্ব রেলের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) মফিজুর রহমান জানান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, মঙ্গলবার দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেনের কাত হয়ে পড়ে থাকা ইঞ্জিনটি ওঠানো হবে।

দুর্ঘটনাকবিলত সেতু মেরামত এবং ট্রেন চলাচলের জন্য লাইন প্রস্তুত দাবি করে তিনি বলেন, ‘‘কালকে অন্তত ট্রেন চালানো যাবে। আপাতত ওই লাইনে যাত্রীবাহী ট্রেন চালানো হবে না। আমরা চেষ্টা করব কালকেই দোহাজারী পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য তেল সরবরাহ করার।’’   

১০দিন ধরে ফার্নেস তেল সরবরাহ বন্ধ থাকায় দোহাজারী ১০০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টের উৎপাদনের সময়কাল কমে গেছে।

ফার্নেস তেলবাহী ওয়াগন দুর্ঘটনার আগে যেখানে ওই কেন্দ্রে প্রতিদিন গড়ে ১০ ঘন্টা বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো, তা নেমে এসেছে দুই থেকে তিন ঘণ্টায়।

কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক আরিফুর রহমান ভূইয়া সোমবার বলেন, “গত ২২ জুন থেকে প্রতিদিন গড়ে তিন ঘণ্টা চালু থাকছে বিদ্যুৎকেন্দ্র।

“বর্তমানে কেন্দ্রে প্রায় ১৮০০ মেট্রিক টন ফার্নেস তেল মজুদ আছে। রেলওয়ে আমাদের আশ্বস্ত করেছে দুয়েক দিনের মধ্যে লাইন ঠিক হলে তেল সরবরাহ করবে।”

গত ২২ জুন তিনি জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রে ২২০০ মেট্রিক টন তেল মজুদ আছে।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তারা জানান, প্রতিদিন ১০ ঘন্টা কেন্দ্র চালু রেখে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ২০০ মেট্রিক টন তেলের প্রয়োজন হয়।

বর্তমানে গড়ে ৬০ মেট্রিক টন করে ফার্নেস তেল খরচ করা হচ্ছে বলেও জানান তারা।