কক্সবাজারে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি

টানা পাঁচ দিনের ভারি বর্ষণের পর কক্সবাজারের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। রোববার সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকার পানি নামতে শুরু করেছে।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 June 2015, 08:40 PM
Updated : 28 June 2015, 08:40 PM

কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক ও মেরিন ড্রাইভ সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেওয়া অনেকেই বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে।

এ বন্যার কারণে জেলায় ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও ফসলের বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এ ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের কাছে চাল ও নগদ টাকা চাওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসকের বরাত দিয়ে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম এ সকল তথ্য নিশ্চিত করেন।

কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক অনুপম সাহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পানি নামতে শুরু করায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেওয়া অনেকেই বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শবীবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জেলার বাঁকখালী ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার নিচে ২ ফুট নিচে নেমে গেছে।

রোববার সকাল থেকে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বন্যার কারণে উঁচু জায়গায় জমে থাকা পানিও নামতে শুরু করেছে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক বলেন, গত পাঁচদিনে কক্সবাজারে এক হাজার ১২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোন বৃষ্টিপাত হয়নি।

দু-এক দিনের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে বলে আশাবাদী তিনি।

ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত পাঁচ দিনের টানা ভারি বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে পানিতে ডুবে গিয়েছিল কক্সবাজার জেলা শহর ও সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন।

চকরিয়ার পৌর এলাকাসহ ১৮টি ইউনিয়ন, পেকুয়ার ৭টি ইউনিয়ন, রামুর ১১টি ইউনিয়ন এবং উখিয়া, টেকনাফ, কুতুবদিয়া ও মহেশখালী উপজেলার ২৫ ভাগ এলাকা।

পানিতে তলিয়ে গেছে জেলার শতাধিক গ্রামের সহস্রাধিক বাড়ি-ঘর, চিংড়িঘের ও মৎস্য খামার, প্রায় ১০ সহস্রাধিক গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৩২ শতাধিক কিলোমিটার কাঁচা ও পাকা সড়ক।

অপরদিকে মঙ্গলবার থেকে শনিবার পর্যন্ত পাহাড়ি ঢল, পাহাড় ধস, ঝড়ো-হাওয়ায় গাছ চাপায় ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে জেলায় ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান তিনি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আকম শাহরীয়ার জানান, প্রাথমিকভাবে পানিতে ডুবে যাওয়া কৃষি ফসল ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করা হয়েছে। পানি একেবারে নেমে গেলে চূড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।

বন্যার ত্রাণ সহায়তার পাশাপশি প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের কাছে ৭৫০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৭৫ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে বলেও জানান ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক অনুপম সাহা।