রোববার জাতীয় সংসদে বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ প্রস্তাব রেখে বলেন, গত এক সপ্তাহে ১৯৭ জন সংসদ সদস্য তার প্রতি সমর্থন জানিয়ে স্বাক্ষর করেছেন।
এর মধ্য দিয়েই প্রমাণ হয় সংসদের অধিকাংশ সদস্য মনে করেন তামাক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সরকারের আরও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখা উচিত বলেও মন্তব্য করেন সাবের হোসেন চৌধুরী।
তিনি বলেন, “প্রতি বছর তামাকের কারণে বাংলাদেশে আড়াই লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। ২০০৪ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে সরকার সর্বশেষ এই বিষয়ে জরিপ করেছিল। সেই জরিপের পরিসংখ্যান অনুসারে ৫৭ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। বর্তমানে আমাদের হিসাবে এই সংখ্যা আড়াই লাখ।”
জনস্বাস্থ্যে একে একটি বড় চ্যালেঞ্জ মন্তব্য করেন সাবের হোসেন চৌধুরী এ বিষয়ে নিয়মিত জরিপের আহ্বান জানান।
“বাংলাদেশে প্রতি দুই মিনিটে এক জন মারা যায়। ঘণ্টায় ২৮ জন মারা যায়। রানা প্লাজার কথা আমরা বলি, কিন্তু এটার কথা কেন বলি না?”
দেশের ৮ কোটি মানুষ তামাকের কারণে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলেও জানান এই সরকার দলীয় সংসদ সদস্য।
তারপরও সরকার কেন তামাক কোম্পানিগুলোকে মুনাফা অর্জনের সুযোগ করে দিচ্ছে- প্রশ্ন রাখেন ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) সভাপতি।
“আমরা কেন কর বাড়ানোর মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব বাড়াতে পারি না?”
সাবের হোসেন বলেন, “তামাক নিয়ে কথা বললেই একটা ধূম্রজাল সৃষ্টি করা হয়। রাজস্বের কথা বলা হয়। কিন্তু এই খাতে পাওয়া রাজস্বের দ্বিগুণ স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করতে হয়।”
সামাজিক ক্ষতি ধরা হলে এই পরিমাণ আরও বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।
সরকারদলীয় এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, “তামাকের কারণে বনভূমি উজাড় হচ্ছে। কৃষি জমি কমে যাচ্ছে। জমি উর্বরতা হারাচ্ছে। এই সব হিসাব অর্থমন্ত্রী নিশ্চয়ই করেন।
“প্রতি বছর তামাকের কর না বাড়িয়েই দাম বাড়ানো হয়। এভাবে কেন তামাক কোম্পানির লাভ বাড়ানো হচ্ছে।”
তামাক কোম্পানির মুনাফা বাড়িয়ে কীভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব- এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বিগত প্রায় দেড় দশকে দাম ও করের হার তুলে ধরেন।
“এই সময়ে ২২০ থেকে ৮৩৩ ভাগ দাম বেড়েছে। আর কর বেড়েছে ৩৩ ভাগ।”
অন্যদকে পাট শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার আহ্বান জানিয়ে সাবের হোসেন বলেন, “আমাদের অধিকাংশ পাটকল ৫০ এর দশকে স্থাপিত হয়েছে। এই কারখানাগুলো দিয়ে বর্তমান বাজারে টিকে থাকা সম্ভব নয়।”
“এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এখানে পাটের বহুমুখীকরণ একটা বড় বিষয়। কিন্তু এই খাতে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
বাজেটে আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকার দলীয় অপর সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিন নাছিম শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর আহ্বান জানান।
শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে ১১ দশমিক ৬ শতাংশ বরাদ্দ যথেষ্ট নয় উল্লেখ করে নাসিম বলেন, “ইউনেস্কোর মানদণ্ড অনুসারে শিক্ষায় ২০ ভাগ বরাদ্দ বাড়ানো উচিত।”