কোকেন আটকে মামলা, তদন্তে কমিটি

চট্টগ্রাম বন্দরে আটক কন্টেইনারে থাকা সানফ্লাওয়ার অয়েলে তরল কোকেনের অস্তিত্ব মেলার পর একটি মামলা হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক চট্টগ্রাম ‍ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 June 2015, 02:18 PM
Updated : 28 June 2015, 02:18 PM

এছাড়া ঘটনা তদন্তে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে চার সদস্যের একটি কমিটিও করা হয়েছে।

রোববার এসআই ওসমান গণি বাদি হয়ে বন্দর থানায় দুজনকে আসামি করে মামলটি করেন।

বন্দর থানার ওসি এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খান জাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ এবং কর্মচারী সোহেলকে আসামি করা হয়েছে।

আটক কর্মচারী সোহেলকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর পাশাপাশি তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিন পুলিশি হেফাজতে চেয়ে আদালতে আবেদন করেছে পুলিশ।

নূর মোহাম্মদ দাবি করে আসছেন, তার অজান্তেই কর্মচারী সোহেল ওই তেল আমদানিতে যুক্ত হয়েছিলেন।  

ভোজ্যতেল ঘোষণা দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আসা কন্টেইনারের নমুনার পুনঃপরীক্ষায় তরল কোকেনের অস্তিত্বের প্রমাণ মেলার একদিন বাদেই মামলাটি করা হল।

দেড় মাস আগে বন্দরে আসা ওই কন্টেইনারে থাকা ৯৬ নম্বর ড্রামের তরলের পুনঃপরীক্ষায় কোকেনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে বলে শনিবার শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর জানায়।

ওই ড্রামের ১৮৫ কেজি সানফ্লাওয়ার অয়েলের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ তরল কোকেন বলে ধারণা শুল্ক গোয়েন্দার।

সানফ্লাওয়ার অয়েল ঘোষণা দিয়ে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ বলিভিয়া থেকে কন্টেইনারটি আমদানি করা হয় খান জাহান আলী লিমিটেডের নামে।

গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ মাসের ৭ জুন চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি ইয়ার্ডে থাকা কন্টেইনারটি আটক করে সিলগালা করে দেয় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর।

পরদিন গোয়েন্দা পুলিশ, শুল্ক গোয়েন্দা, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বন্দর, নৌবাহিনী, কাস্টমসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে কন্টেইনারে থাকা ভোজ্যতেলের কায়িক পরীক্ষা হয়।

গত ৮ জুন বন্দরে পরীক্ষা হলেও তাতে কোকেনের প্রমাণ মেলেনি

প্রাথমিক পরীক্ষায় ১০৭টি তরল ড্রামের কায়িক পরীক্ষায় তরল কোকেনের নমুনা ধরা না পড়লেও পুলিশের চাপে পুনঃপরীক্ষার জন্য নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল।

এদিকে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হোসাইন আহাম্মদের নেতৃত্বে করা কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন উপ-পরিচালক জাকির হোসেন, সহকারী পরিচালক ওমর ফারুক ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আমিনুর রহমান।

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মঈনুল খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তরল কোকেন আনার সঙ্গে কারা যুক্ত এবং কীভাবে তা আনা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখে প্রতিবেদন দেবে তদন্ত কমিটি।

তিনি বলেন, বন্দরে রাখা কন্টেইনারটির নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে।

কোন চক্রের মাধ্যমে কোকেনের চালান আনা হয়েছে, তার তদন্তে আন্তর্জাতিক সহায়তার জন্য ইউনাইটেড নেশনস অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইমকে (ইউএসওডিসি) চিঠি দেওয়া হয়েছে বলেও জানান মঈনুল খান।

খাতুনগঞ্জের খান জাহান আলী লিমিটেডের নামে কন্টেইনারটি আমদানি করা হলেও বন্দরে আসার পর এর মালিকানা কেউ দাবি করেনি।

কন্টেইনার সিলগালা করার আগে আমদানিকারক খান জাহান আলী লিমিটেডের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান প্রাইম হ্যাচারির ব্যবস্থাপক সোহেলকে আটক করে পুলিশ।