শনিবার চার শিশুকে আটকের পর তাদের দেওয়া তথ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, যাদের একজন একটি সাইকেল দোকানের মালিক, অন্যজন আরেকটি দোকানের কর্মচারী।
এই দুজনসহ কয়েকজন সাইকেল চুরিতে নগরীর দামপাড়া এলাকার ওই শিশুদের ব্যবহার করছিল বলে কোতোয়ালি থানার এসআই মো. ইলিয়াছ জানিয়েছেন।
ওই শিশুরা পুলিশকে জানিয়েছে, প্রতিটি সাইকেল চুরির পর তাদের ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা করে দেওয়া হত।
ওই অর্থ দিয়ে কী করত- জানতে চাইলে চার শিশু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানায়, প্রথমে তারা জিইসি মোড় থেকে বিরিয়ানি কিনে খেত এবং পরে ভিডিও গেইমস খেলত।
গ্রেপ্তার চার শিশুর বয়স নয় থেকে ১৩ বছরের মধ্যে। তাদের সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের জিম্মায় শিশু সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে বলে কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নেজাম উদ্দিন জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তার অন্য দুজন সুজন আচার্য্য (২৭) এবং সাইফুল ইসলাম (২৫) কে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
সুজন বন্দর নগরীর সদরঘাটের ‘সাইকেল মেলা’ নামে একটি দোকানের মালিকের ভাই। সাইফুল ‘সাইকেল মার্ট’ নামে অন্য একটি দোকানের কর্মচারী।
এসআই ইলিয়াছ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, শনিবার দুপুরে দিদার মার্কেট এলাকায় সাইকেল চুরির সময় নয় বছর বয়সী এক শিশুকে স্থানীয়রা হাতে-নাতে ধরে পুলিশে দেয়। তার দেওয়া তথ্যে আটক করা হয় আরও তিন শিশুকে।
কোতোয়ালি থানায় গিয়ে দেখা যায়, থানার পরিদর্শকের (তদন্ত) কক্ষে বসিয়ে রাখা হয়েছে শিশু চারটিকে।
তারা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানায়, তারা সবাই দামপাড়ার এক নম্বর গলিতে থাকে। ব্যাটারি গলি এলাকার রনি নামে একটি ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকের কথায় তারা সাইকেল চুরি করে।
গত ছয় মাসে নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে শতাধিক সাইকেল চুরিতে জড়িত থাকার কথা জানায় তারা।
শিশুগুলো জানায়, রনি বিভিন্ন জায়গায় যাত্রী নিয়ে যাওয়ার সময় কোনো বাইসাইকেল দেখলে তার খবর নিয়ে আসে। পরে তাদের নিয়ে যায় সেই এলাকায় সাইকেল চুরি করে আনতে।
চুরি করা সাইকেল চালিয়ে বা রনির রিকশায় করে সদরঘাট এলাকায় নিয়ে যাওয়া হত বলে শিশুগুলো জানায়। তারা বলেছে, সাইকেল মেলার মালিক সুমনের কাছে চোরাই সাইকেল বিক্রি দেওয়া হত।
শিশুদের কাছে তথ্য পেয়ে শনিবার রাতে সদরঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করে সুজন ও সাইফুলকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে কোতোয়ালি থানার এসআই প্রিটন সরকার জানিয়েছেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সুজনের স্বীকারোক্তি অনুসারে পাথরঘাটা আশরাফ আলী রোডের মুছা কলোনিতে তাদের বাসা থেকে ছয়টি সাইকেল উদ্ধার করা হয়।
“শিশুদের আটকের খবর পেয়ে সুমন ও রনি পালিয়ে গেছে,” বলেন এসআই প্রিটন।