ব্রাজিলের গম নিয়ে খাদ্যমন্ত্রীর চ্যালেঞ্জ

ব্রাজিল থেকে আমদানি করা গম নিয়ে চাপে থাকা খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম সমালোচকদের যে কোনো পরীক্ষাগারে ওই গম পরীক্ষার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 June 2015, 11:44 AM
Updated : 28 June 2015, 12:16 PM

ব্রাজিল থেকে আমদানি করা ওই গম পচা বলে অভিযোগ ওঠার পর খাদ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিও ইতোমধ্যে উঠেছে।

এই প্রেক্ষাপটে কামরুল সচিবালয়ে রোববার ওই গম পরীক্ষার দুটি প্রতিবেদন সাংবাদিকদের দেখিয়ে বলেন, গমের মান নিয়ে তার মনে কোনো প্রশ্ন নেই।

গম নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পরপরই খাদ্য অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের খাদ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটে পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠানো হয়েছিল।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “চার মাস আগে যে সব প্যারামিটারের (মানদণ্ড) ভিত্তিতে ব্রাজিলের গম আমরা যেভাবে রিসিভ করেছিলাম, পরীক্ষা করে দেখা গেছে এখনও তেমন আছে।

“এ গম সম্পূর্ণ খাবার উপযোগী। খাদ্য অধিদপ্তর ও সায়েন্স ল্যাবরেটরির (বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ) পরীক্ষায় এটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। গমের মান নিয়ে আমি স্যাটিসফাইড।”

ব্রাজিল থেকে আমদানি করা গম নিতে পুলিশ ও বিজিবি অস্বীকৃতি জানানোর পর প্রধানমন্ত্রী এনিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বলে সংবাদ মাধ্যমের খবর।

কামরুল ইসলাম (ফাইল ছবি)

এই বিষয়ে কামরুল সম্প্রতি সংসদে বলেন, “এর মধ্যে (পরীক্ষার উদ্যোগ) এই গমের খুবই খারাপ ‍কিছু স্যাম্পল কে বা কারা প্রধানমন্ত্রীকে পৌঁছে দেয়। সেটা দেখে খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রধানমন্ত্রী উষ্মা প্রকাশ করেন।”

গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন এই গম আমদানির সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবির পাশাপাশি খাদ্যমন্ত্রী কামরুলের পদত্যাগের দাবি তোলেন।   

কামরুল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন “এরপরও (পরীক্ষার প্রতিবেদন দেখেও) যদি টিআইবি, সুজন, সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বা বামদল কারও যদি সন্দেহ থেকে থাকে, আমি তাদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছি।

“তারা আমাদের যে কোনো গোডাউন থেকে গম সংগ্রহ করে যে কোনো ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করতে পারে। আমি এজন্য তাদের সহযোগিতাও করব।”

সংবাদপত্রে প্রকাশিত গমের ছবির সঙ্গে খাদ্য অধিদপ্তরের গুদামে থাকা গমের কোনো মিল নেই দাবি করে খাদ্যপণ্য নিয়ে ‘রাজনীতি ও মিথ্যাচার’ করে মানুষকে বিভ্রান্ত না করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান কামরুল।

সংবাদপত্রে প্রকাশিত ব্রাজিলের গমের ছবি

ব্রাজিল থেকে দুই লাখ টন গম আমদানির কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ইউক্রেইন সঙ্কটকে দায়ী করেছিলেন কামরুল।

তিনি সংসদে বলেছিলেন, গত সরকার আমলে ৫ লাখ টন গম আমদানির জন্য ইউক্রেইনের সঙ্গে বাংলাদেশের সমঝোতা হয়েছিল। তিনি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন করে আড়াই লাখ টন গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়।

“কয়েক দফা মিটিংয়ে দাম ও মান চূড়ান্ত করার পর ইউক্রেইনের সঙ্গে রাশিয়ার পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে। এই সময়ে দেশটি হঠাৎ যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।”

এই সময় বাংলাদেশের গমের মজুদ ৬৮ হাজার টনে নেমে আসায় দ্রুত আমদানির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়।

“সেখানে সর্বনিম্ন দরদাতা দুই প্রতিষ্ঠান ব্রাজিলের গম দিতে চায়। আমাদের এই গম কেনার অভিজ্ঞতা ছিল না। তবে যে স্যাম্পল আমাদেরকে দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো আমরা পরীক্ষা করে দেখি। এই গম লাল ও দানাগুলো ছোট।”

ব্রাজিল থেকে আর গম আমদানি না করার ঘোষণাও ইতোমধ্যে দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী।