সরকার প্রধান ‘লেডি হিটলার’: খালেদা

বাংলাদেশের বর্তমান সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘লেডি হিটলার’ বলেছেন বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া।

এই সরকার থেকে ‘দেশবাসীকে রক্ষায়’ তারাবির নামাজে সমমনাদের কাছে দোয়াও প্রত্যাশা করেছেন তিনি।

শনিবার রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সিটির ‘রাজদর্শনে’ কাজী জাফর আহমদ নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির ইফতারে অংশ নিয়ে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, “এই রমজান মাসে সকলে প্রত্যেক তারাবির নামাজে দোয়া করব- এই জালেম, স্বৈরাচার, দুর্নীতিবাজের হাত থেকে, এই ‘লেডি হিটলারের’ হাত থেকে দেশবাসীকে ‘আল্লাহতালা’ যেন রক্ষা করেন-এই কামনা করছি।”

সরকারের বিরুদ্ধে সব দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, “অনেক রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ আজ এখানে উপস্থিত আছেন। তাদের সকলকে বলব, রমজানে যেভাবে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি, আসুন আগামীতেও দেশ ও মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে আমরা সকলে একসঙ্গে অবস্থান করতে পারি কি না, আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে বসি।

“কে ছোট কে বড় এখানে আমরা বিচার করব না। আমরা বিচার করব, দেশের কথা, মানুষের কথা। দেশের মানুষকে বিপদ থেকে রক্ষা করার জন্য আমাদের সকলকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাই।”

কাজী জাফর আহমদ আয়োজিত ইফতার পার্টিতে বিকল্পধারার সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ,  জামায়াতে ইসলামীর  রিদওয়ান উল্লাহ শাহিদী, ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুল লতিফ নেজামী, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাগপার শফিউল আলম প্রধান, এনডিপির খন্দকার গোলাম মূর্তজা, ন্যাপের জেবেল রহমান গানি, লেবার পার্টির মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, বিজেপির সালাহউদ্দিন মতিন প্রকাশ, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, জমিয়তে উলামা ইসলামের মাওলানা মজিবুর রহমান, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন, ডিএল’র সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দাররেক নিয়ে এক টেবিলে বসেন জোট নেত্রী খালেদা জিয়া।

এছাড়া জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুল রব, বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত যুগ্ম মহাসচিব আশরাফ হোসেন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জাফরুল্লাহ চৌধুরী, দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এমএম বাহাউদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, কলামনিস্ট মাহফুজউল্লাহ ও মোস্তফা কামাল মজুমদার ছাড়াও চীন ও কোরিয়ার কয়েকজন কূটনীতিক ইফতারে উপস্থিত ছিলেন।

ব্রাজিল থেকে গম আমদানির সমালোচনা করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, “কয়েকদিন আগে ব্রাজিল থেকে সরকার পচা গম আমদানি করেছে। ওই পচা গম যাদের দেয় কেউ নিতে চায় না। সেনাবাহিনীকে দিতে চেয়েছে, তারা রিফিউজ করেছে, পুলিশও রিফিউজ করেছে।

“এখন এগুলো কাদের খাওয়াবে? সাধারণ মানুষকে খাওয়াব। আমরা বলতে চাই, ওই সব পচা গম আওয়ামী লীগের লোকজনকে খাওয়ান। তাদের স্বাস্থ্য ভালো হয়েছে, তারা লুটপাট করে অনেক ইনকাম করেছে। তাদের টকার অভাব নেই। সুইস ব্যাংকে তাদের টাকা বাড়ছে। আর দেশের মানুষ গরীব থেকে গরীব হচ্ছে।”

সরকারের বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতি ও অপশাসনের’ অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, “প্রতিটি কাজে তাদের দুর্নীতি চলছে। টেন্ডার ছাড়া বড় বড় প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। ওই সব প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে না, শুধু তারা কমিশন ভাগাভাগি করে নিয়ে যাবে।”

কক্সবাজার ও বান্দরবানে পাহাড়ি ঢল ও ধসে নিহতদের প্রতি শোক ও সমবেদনা জানান খালেদা জিয়া।

ইফতার শুরুর আগে টেবিলে টেবিলে গিয়ে আগতদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন খালেদা জিয়া।

ইফতারে বিএনপি নেতাদের মধ্যে সেলিমা রহমান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবীর খোকন, সৈয়দ মেহেদি আহমেদ রুমী, হাসানউদ্দিন সরকার, নুরী আরা সাফা, শিরিন সুলতানা, শ্যামা ওবায়েদ, ২০ দলীয় জোটের খন্দকার লুৎফর রহমান, শাহাদাত হোসেন সেলিম, গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, হামদুল্লাহ আল মেহেদি, এমএম আমিনুর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।