ঢাকায় ভারত সমর্থক সুধীরের উপর হামলা হয়নি: প্রত্যক্ষদর্শী

খেলা শেষে মিরপুর স্টেডিয়ামের বাইরে ভারত সমর্থক সুধীর গৌতমের উপর হামলা হয়েছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যম দাবি করলেও প্রত্যক্ষদর্শী এক আলোকচিত্র সাংবাদিক বলেছেন, সেখানে কোনো হামলা হয়নি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 June 2015, 12:21 PM
Updated : 22 June 2015, 01:39 PM

রোববার রাতে খেলা শেষের পর স্টেডিয়ামের গেইটের কাছে সুধীর গৌতমের উপর ‘হামলার’ খবর ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয়।

এদিন ভারতকে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। গ্যালারিভরতি টাইগার সমর্থকদের উল্লাসধ্বনির মধ্যে ভারতীয় সমর্থক সুধীরও খেলা দেখেছিলেন।

মুখ ও শরীরে ভারতের পতাকা এঁকে খেলা দেখতে যাওয়া সুধীর বের হওয়ার পর টাইগার সমর্থকদের তোপে পড়েন বলে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের খবর।

ঘটনাস্থলে থাকা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আলোকচিত্র সাংবাদিক আসিফ মাহমুদ অভি বলেন, সুধীরের উপর শারীরিক আক্রমণের কোনো ঘটনা দেখা যায়নি।

স্টেডিয়ামের ২ ও ৩ নম্বর গেইটের মাঝামাঝিতে সুধীরের অটোরিকশায় ওঠার ছবিও তোলেন অভি।

তিনি বলেন, “খেলা শেষে পৌনে ১২টার পরপরই গেইট দিয়ে বের হওয়ার সময় বাংলাদেশের সমর্থকরা সবাই সুধীর গৌতমকে ঘিরে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলছিল। ‘মওকা-মওকা’ বলেও টিটকারি করছিলেন কয়েকজন।”

গত বিশ্বকাপে প্রথমে ভারত-পাকিস্তান খেলা নিয়ে ‘মওকা-মওকা’ নিয়ে বিজ্ঞাপন করেছিল স্টার স্পোর্টস। বিজ্ঞাপনটি আলোচিত হওয়ায় পরে ভারতের প্রতিটি ম্যাচের আগেই বানানো হয়েছিল নতুন নতুন ‘মওকা মওকা’ বিজ্ঞাপন।

এর মধ্যে ভারতের সমর্থকরা বাংলাদেশকে নিয়েও নিজেদের তৈরি কিছু ‘মওকা’ ভিডিও ইউটিউবে ছাড়ে, যাতে বাংলাদেশকে অবমাননা করা হয়েছে অভিযোগ করে পাল্টা ভিডিও ছাড়া হয়। 

অটোরিকশায় উঠে স্টেডিয়াম এলাকা ছেড়ে যাচ্ছেন সুধীর গৌতম

অভি বলেন, “সুধীর সিএনজি ভাড়া করার চেষ্টা করছিলেন। এ সময় বাংলাদেশ সমর্থকরা তাকে ঘিরে টিপ্পনী কাটতে থাকেন। ভিড় দেখে সেখানে দায়িত্ব পালন করা কয়েকজন পুলিশ সদস্য এসে তাকে ঘিরে রেখে একটি সিএনজি অটোরিকশায় তুলে দেয়। তখন বাংলাদেশ সমর্থকদের বেশ কয়েকজন ‘ভুয়া-ভুয়া’ বলে কিছু দূর অটোরিকশা পেছন পেছন যায়।”

সুধীরকে উদ্ধৃত করে কলকাতার দৈনিক আনন্দবাজার লিখেছে, বাংলাদেশের এক দল সমর্থক ভারতের এই সমর্থকের উপর হামলা চালিয়েছিল। তার অটোরিকশা লক্ষ্য করে পাথরও ছোড়া হয়।

অভি বলেন, “তাকে (সুধীর) শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার মতো কিছুই আমার নজরে পড়েনি।”

ভারতীয় ক্রিকেট দল ও শচীন টেন্ডুলকারের জন্য জীবন উৎসর্গের ঘোষণা দেওয়া সুধীরের ঘটনাটিকে ‘হামলা’ বলে ভারতের প্রায় প্রতিটি সংবাদপত্র ও টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে।

ভারতের খেলা দেখতে এনিয়ে অষ্টমবার ঢাকায় এসেছেন সুধীর।

মিরপুর থানা পুলিশও বলছে, ভারতীয় সমর্থকের উপর হামলার কোনো ঘটনাই ঘটেনি।

ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার কাইয়ুমউজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, স্টেডিয়ামসহ পুরো এলাকায় কঠোর নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল পুলিশ।

“অত্র এলাকায় কারও উপর কেউ হামলা করেছে বা আক্রমণ করেছে, এরকম কোনো ঘটনা আমার জানা নেই।”