ছিটমহলের উন্নয়নে ২০০ কোটি টাকা

ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে স্থল সীমান্ত চুক্তি কার্যকরের বাধা দূর হওয়ার ছিটমহলের উন্নয়নে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 June 2015, 02:18 PM
Updated : 4 June 2015, 02:18 PM

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে বিশেষ এই বরাদ্দের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, “১৯৭৪ সালে সম্পাদিত ইন্দিরা-মুজিব চুক্তির ধারবাহিকতায় ভারতীয় সংসদে স্থলসীমান্ত বিল অনুমোদিত হওয়ার ফলে ছিটমহলবাসীর দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান হতে যাচ্ছে।”

স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের পর বাংলাদেশের ভেতর ভারতের ১১১টি ছিটমহল বাংলাদেশের ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হবে। একইভাবে ভারতের ভেতর থাকা বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল হয়ে যাবে ভারতের ভূমি।

বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের পরিধি ছিটমহল পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে উল্লেখ করে মুহিত বলেন, “ছিটমহলবাসীর কল্যাণ চিন্তা করে তাদের এলাকায় উন্নয়ন কার্যক্রম বেগবান করার জন্য এই বাজেটে ২০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।”

তবে এখন থেকে এই ছিটমহলগুলোকে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ তাদের উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

অবিভক্ত ভারতের অংশ থেকে পাকিস্তান হয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর স্থল সীমান্ত সমস্যার অবসানে ১৯৭৪ সালে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি হয়।

এর আওতায় ছিটমহল বিনিময়ে বাংলাদেশের দিক থেকে সব প্রক্রিয়া সারা হলেও ভূমি ছাড়তে সংবিধান সংশোধনের বাধ্যবাধকতা থাকায় ভারতের দিক থেকে তা আটকে ছিল।

২০১১ সালে ভারতে তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময় স্থল সীমান্ত সমস্যার সমাধানে দুই দেশের মধ্যে একটি প্রটোকল সই হলেও সংবিধান সংশোধন করতে পারেনি।

নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার মন্ত্রিসভা ও রাজ্যসভা হয়ে ৭ মে ভারতের লোকসভায় সর্বসম্মতভাবে সংবিধান সংশোধন বিলটি পাস হলে সীমান্ত চুক্তি কার্যকরের বাধা দূর হয়। এখন শিগগিরই মুক্তি মিলবে বলে আশায় আছে দুই দেশের ১৬২টি ছিটমহলের বাসিন্দারা।

২০১১ সালে দুই দেশের যৌথ উদ্যোগে শুমারি অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের ১১১টি ছিটমহল রয়েছে, এতে রয়েছে ৩৭ হাজার মানুষের বাস। অন্যদিকে ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহলের বাসিন্দা ১৪ হাজার।

প্রটোকলের আওতায় অপদখলীয় ভূমি নিয়ে বিরোধের অবসানও ঘটবে। এতে ভারত অপদখলীয় ২৭৭৭ একর জমির মালিকানা পাবে। আর ২২৬৭ একর জমির উপর বাংলাদেশের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হবে।

আর চুক্তি ও প্রটোকল অনুযায়ী ছিটমহলবাসী তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী নাগরিকত্ব বেছে নিতে পারবেন। তবে ২০১১ সালের এক জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশের মধ্যে থাকা ছিটমহলের কিছু বাসিন্দা ভারতে যেতে চাইলেও ভারতের ভেতরে থাকা ছিটমহলের বাসিন্দাদের কেউ বাংলাদেশে আসতে চাননি।