বাংলাদেশিরা ‘জোরপূর্বক’ পাচারের শিকার: পররাষ্ট্র সচিব

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাগর থেকে উদ্ধার বাংলাদেশিরা স্বেচ্ছায় নয়,জোরপূর্বক পাচারের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 June 2015, 12:22 PM
Updated : 2 June 2015, 06:08 PM

মঙ্গলবার সাগর পথে বাংলাদেশিদের পাচারের ধরন সম্পর্কে বলতে গিয়ে সাংবাদিকদের সামনে মানবপাচারের ক্ষেত্রে বহুল ব্যবহৃত ইংরেজি ‘স্মাগলিং’ ও ‘ট্রাফিকিং’ শব্দ দুটির ব্যাখ্যা করেন তিনি।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, সাধারণভাবে কারও স্বেচ্ছায় পাচার হওয়াকে ‘স্মাগলিং’ বলা হয়। অন্যদিকে মানবপাচারের ক্ষেত্রে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে বলপ্রয়োগ, প্রতারণা ও নির্যাতনের উপাদান থাকলেই কেবল ‘ট্রাফিকিং’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়।

এশিয়ার অভিবাসন সঙ্কট নিয়ে শুক্রবার ব্যাংককে অনুষ্ঠিত আন্তঃদেশীয় বৈঠকের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এই ব্রিফিং হয়।

সাগর পথে থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায় অমানবিক দেশান্তরের চলমান ঘটনাগুলোর মধ্যে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

শহিদুল হক বলেন, প্রাথমিক যাচাইয়ে এ তিনটি দেশে আন্তর্জাতিক শরণার্থী শিবিরে অবস্থানরত পাচার হওয়া এসব মানুষের মধ্যে ৩০ শতাংশ বাংলাদেশের বলে দেখা যাচ্ছে, যাদের সর্বমোট সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার।

“এক মাসের মধ্যে চূড়ান্ত যাচাই হয়ে গেলেই আমরা তাদের ফিরিয়ে আনব।”

ওই দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ মিশনের সংগ্রহ করা প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত যাচাইয়ের কাজ করছে বলে জানান তিনি।

মানবপাচারের বিরুদ্ধে থাইল্যান্ডে কঠোর অভিযান শুরুর পর প্রধানত মিয়ানমার থেকে আসা এসব মানুষকে আশ্রয় দিতে এই তিন দেশে শরণার্থী শিবির খোলা হয়েছে।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ব্যাংকক বৈঠক চলাকালে এধরনের পাচারের ‘মূল কারণ’ অনুসন্ধানের এবং পাচারকৃত ব্যক্তিদের মানবাধিকার রক্ষার উপর দেন তিনি।

“আমরা আন্তর্জাতিক মহলের সঙ্গে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। আমাদের সরকার মানবপাচারকারীদের এক বিন্দুও ছাড় দেবে না।”

এমনকি মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলও বৈঠক শেষে ‘বিষয়টি নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার’ আহ্বান জানিয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

“আমি বলেছি, আমরা সবসময় উদার এবং একসঙ্গে কাজ করতে ও সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।”

তবে এ বিষয়টি নিয়ে ‘রাজনীতিকরণের’ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “আমরা যদি এটা করি, তাহলে পাচার হওয়া মানুষদের ক্ষতি হবে।

“কোটি কোটি ডলারের এই অপরাধ বাণিজ্য মোকাবেলায় দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিকভাবে আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে।” তিনি বলেন, আসছে ৬-৭ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফরের সময় মানবপাচার মোকাবেলায় একসঙ্গে কাজ করতে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে।

শহিদুল হক বলেন, “পুরো বিষয়টি ‘অত্যন্ত জটিল’। এটাকে প্রত্যক্ষভাবে দরিদ্রতার সঙ্গে সম্পৃক্ত করা যাবে না, আরও অন্যান্য উপাদানও আছে।”

ব্যাংকক বৈঠকে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেছেন, সম্পদের অপ্রতুলতা সত্ত্বেও মানবিক উন্নয়নে প্রভূত সমৃদ্ধি অর্জন করেছে বাংলাদেশ, যা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে।

“এই প্রেক্ষাপটে বলা যায়, আমাদের তাৎক্ষণিক নিয়ন্ত্রণের বাইরে অন্য কোনো বিষয় বা শক্তি প্রয়োগ কাজ করছে যা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশের মানুষকে সাগরে নামতে বাধ্য করছে।

মাতৃভূমি মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর উৎপীড়নের দিকে প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত করে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “এই সব বিষয়ের খোঁজে বাইরের উপাদান ও শক্তির উপরও আমাদের নজর দিতে হবে।”

দীর্ঘদিন ধরেই রোহিঙ্গাদের ‘বর্মী জাতীয়তা’ অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার এবং ব্যাংককের শুক্রবারের বৈঠকে তাদের দিকে ‘অঙ্গুলি নির্দেশের’ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছে দেশটি।

আরাকান উপকূলে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের বহু বছর ধরেই ‘অবৈধ বাঙালি’ আখ্যায়িত করে আসছে মিয়ানমার।

তিনি বলেন, আসছে ৬-৭ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফরের সময় মানবপাচার মোকাবেলায় একসঙ্গে কাজ করতে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে।

শহিদুল হক বলেন, “পুরো বিষয়টি ‘অত্যন্ত জটিল’। এটাকে প্রত্যক্ষভাবে দরিদ্রতার সঙ্গে সম্পৃক্ত করা যাবে না, আরও অন্যান্য উপাদানও আছে।”

ব্যাংকক বৈঠকে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেছেন, সম্পদের অপ্রতুলতা সত্ত্বেও মানবিক উন্নয়নে প্রভূত সমৃদ্ধি অর্জন করেছে বাংলাদেশ, যা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে।

“এই প্রেক্ষাপটে বলা যায়, আমাদের তাৎক্ষণিক নিয়ন্ত্রণের বাইরে অন্য কোনো বিষয় বা শক্তি প্রয়োগ কাজ করছে যা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশের মানুষকে সাগরে নামতে বাধ্য করছে।

মাতৃভূমি মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর উৎপীড়নের দিকে প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত করে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “এই সব বিষয়ের খোঁজে বাহ্যিক উপাদান ও শক্তির উপরও আমাদের নজর দিতে হবে।”

দীর্ঘদিন ধরেই রোহিঙ্গাদের বর্মী জাতীয়তা অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার এবং ব্যাংককের শুক্রবারের বৈঠকে তাদের দিকে ‘অঙ্গুলি নির্দেশের’ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছে।

আরাকান উপকূলে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের বহু বছর ধরেই ‘অবৈধ বাঙালি’ আখ্যায়িত করে আসছে মিয়ানমার।