‘ভিকি বলতেই অন্যরকম আনন্দ’

সেরাদের তালিকায় এক ধাপ পিছিয়ে গেলেও ফল নিয়ে সন্তুষ্ট ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সুফিয়া খাতুন।

হাসিবা আলী বর্ণাবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 May 2015, 04:09 PM
Updated : 30 May 2015, 04:09 PM

গত বছর দেশসেরার তালিকায় তৃতীয় স্থানে ছিল রাজধানীর এই স্কুলটি।

ফলাফলে প্রকাশের পর কৃতি শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানাতে এসে স্কুল মাঠে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “ভিকারুননিসা পিছিয়ে পড়ে নাই। আমাদের শিক্ষার্থী অনেক। শিক্ষার্থী সংখ্যার অনুপাত ধরলে আমরাই এগিয়ে। তবে আমাদের প্রতিষ্ঠানে মানবিক শাখা থাকায় জিপিএ অনুপাত একটু কমে এসেছে।”

“ঢাকার অনেক ভাল ভাল স্কুলেই মানবিক শাখা নেই। কিন্তু প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে মানবিক শাখা থাকা জরুরি বলে আমরা মনে করি।”

এই প্রতিষ্ঠান থেকে এক হাজার ৫০৩ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে এক হাজার ৫০১ জন; পাসের হার ৯৯.৮৭ শতাংশ।

এদের মধ্যে  জিপিএ ৫ পেয়েছে এক হাজার ২৯০ জন।

বিজ্ঞান বিভাগে থেকে ১২৭৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১২৫৭ জন। এছাড়া মানবিক বিভাগ থেকে ২০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে তিন জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা থেকে ২০৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩০ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।

শনিবার দুপুর ১টার পর থেকেই স্কুল চত্বরে ফলাফল জানতে আসা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ভিড় জমাতে থাকেন। ফল প্রত্যাশিত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা যায় আনন্দ-উচ্ছ্বাস। মিষ্টিমুখ করানো, দীর্ঘদিনের সহপাঠীরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে অভিনন্দন জানানো তো ছিলই, এর পাশাপাশি সবাই মিলে হাসিমুখে ‘সেলফি’ তোলা আর বিজয় চিহ্ন দেখিয়ে উল্লাস চিৎকারে উৎসবমুখর হয়ে উঠেছিল স্কুলের পরিবেশ।

বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া তামান্না রহমান, রাওয়াত সাইয়েরা জয়িতাসহ পাঁচ সহপাঠী সেই ক্লাস ওয়ান থেকে একসঙ্গে পড়ছেন। এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলও সবার এক। 

ফলাফল জানতে পেরে একসঙ্গেই তারা আবার স্কুল মাঠে এসে ভাগ করে নিয়েছেন দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণের আনন্দ। তবে এর কৃতিত্ব স্কুলের শিক্ষক ও মায়েদেরই দিতে চান তারা।

উর্মি, রামিসা ও সিলভি তিন সহপাঠী আনন্দ উদযাপনের অংশ হিসেবে ‘সেলফি’ তুলছিল ১০ বছরের চিরচেনা স্কুল মাঠে দাঁড়িয়ে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তাদের একজন বলেন, “সকাল থেকে ভয় ভয় লাগছিল। ইন্টারনেটে রেজাল্ট দেখে এরপর স্কুলে চলে এসেছি। আমরা ১০ বছর ধরে একই পরিচয়ে বড় হচ্ছি, আমরা ‘ভিকি’ এটা বলতে অন্যরকম আনন্দ হয়।”

পরীক্ষা চলাকালে দেশের অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলেও মনে করেন স্কুলের অধ্যক্ষ।

“ধরুন, পরীক্ষার্থীরা ইংরেজি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন সময় আবার ঘোষণা এসেছে ইংরেজি নয়, অন্য পরীক্ষা হবে। এসব কারণে মানসিকভাবে নেতিবাচক প্রভাব ছিল পরীক্ষার্থীদের ওপর। রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে যে মেয়েরা এই রেজাল্ট করেছে তাতে আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। শিক্ষক ও অভিভাবকদেরও অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল এই ফলাফল।”

তবে সব মিলিয়ে স্কুলের সামগ্রিক ফলাফলে সন্তুষ্ট ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ।

“আমি সন্তুষ্ট। তবে আরও ভাল হতে পারত। তবে এও ঠিক যে, উচ্চশিক্ষার জন্য বুয়েট, মেডিকেল, বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তীর্ণ হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৭০ শতাংশই তো আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে বের হওয়া সাবেক শিক্ষার্থী।”