মাগুরা উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ

মাগুরা-১ আসনের উপ-নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে।

মাগুরা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 May 2015, 10:26 AM
Updated : 30 May 2015, 10:26 AM

শনিবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।

নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান বলেন, “কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা বা গোলযোগ ছাড়াই ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে।”

এ আসনের মোট ১৪০টি ভোটকেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে ১৪০ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ৭১১ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও ১৪২২ জন পোলিং কর্মকর্তা কাজ করছেন বলে খুলনা বিভাগীয় অঞ্চলের এই আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

এ আসনে এবারের উপ-নির্বাচনে মোট তিন লাখ ২৩ হাজার ১৪৪ জন ভোটার আছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আছেন চারজন।

এরা হলেন- আওয়ামী লীগের এটিএম আব্দুল ওয়াহহাব (নৌকা), এনপিপির কাজী তৌহিদুল আলম (আম), বিএনএফের মুতাসিন বিল্লাহ রিফাত (টেলিভিশন) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক তপন কুমার রায় (সিংহ)।

ভোটগ্রহণের শুরুতে ভোটারদের উপস্থিতি কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে-সঙ্গে গ্রামের কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়তে দেখা যায়। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বৃষ্টি হওয়ায় ভোটাররা কিছুটা বিপত্তিতে পড়েন।

১৯৯৪ সালে মাগুরা-২ আসনের উপনির্বাচনের ‘কলঙ্ক’ মুছতে এবার নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব, খুলনা রেঞ্জের পুলিশের ডিআইজি, র‌্যাবের খুলনা অঞ্চলের কমান্ডার ও বিজিবি কমান্ডারসহ অন্যান্য সংস্থার কর্মকর্তারা মাগুরায় দফায় দফায় বৈঠক করেছেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তা মুজিবুর জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও আনসারের সমন্বয়ে ৫০টি মোবাইল টিম, নয়টি স্পেশাল মোবাইল টিম, আটটি স্ট্রাইকিং ফোর্সসহ আইন-শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চার হাজার ৩৮১ জন সদস্য নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করছেন।

এছাড়া জুডিশিয়াল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ছয়টি ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকছে নির্বাচনী এলাকায়।

এ আসনের ১৪০টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১০৫টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়।

নির্বাচনে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১০ জন পুলিশ ও ১৪ জন আনসারসহ ২৪ জন এবং সাধারণ কেন্দ্রে আট জন পুলিশ ও ১৪ জন আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২২ জন সদস্য নিয়োজিত রয়েছে।

ভোট শুরুর দুই ঘণ্টার পর সকাল ১০টার দিকে পুলিশ সুপার একেএম এহসান উল্লাহ ও রিটানিং কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান  সাংবাদিকদের বলেন, সকাল থেকে তারা ১৫টির বেশি ভোটকেন্দ্র ঘুরেছেন, তবে কোথাও ‘বিন্দুমাত্র’ অনিয়ম দেখেননি।

কোন প্রার্থীর পক্ষ থেকেও কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে জানান তারা।

এর আগে সদ্য সমাপ্ত তিন সিটি নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ ওঠার পর মাগুরা-১ উপ-নির্বাচন সামনে রেখে প্রতি ঘণ্টায় ভোটের হার জানতে ঢাকায় মহড়া করেছে নির্বাচন কমিশন।

‘মক ভোটিং’-এ দেখা গেছে, প্রতি মিনিটে সর্বোচ্চ একটি ভোট পড়ে। এর বেশি ভোট পড়লেই তাতে কারচুপি হচ্ছে বলে সন্দেহ তৈরি হবে।

এ লক্ষ্যে ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম তদারকিতে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পাঁচজন কর্মকর্তা ঘণ্টায়-ঘণ্টায় প্রতি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তার কাছ থেকে ভোটগ্রহণের হার পর্যবেক্ষণ করবেন।

মাগুরায় এ ধরনের ঘটনা আঁচ করতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের ভোট বাতিলের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ইসি কর্মকর্তারা বলছেন।

মাগুরা সদর উপজেলার নয়টি ও শ্রীপুর উপজেলার আটটি ইউনিয়ন নিয়ে জাতীয় সংসদের মাগুরা-১ আসন গঠিত। টানা চারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ সিরাজুল আকবর ৯ মার্চ মারা যাওয়ায় এ আসনটি শূন্য হয়।