মাগুরা উপনির্বাচনকে ‘মডেল’ হিসেবে দেখতে চায় ইসি

মাগুরা-১ আসনের উপনির্বাচনকে নির্বাচন কমিশন ‘মডেল’ হিসেবে দেখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান।

অলোক বোস মাগুরা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 May 2015, 02:58 PM
Updated : 29 May 2015, 02:58 PM

সদর ও শ্রীপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত এলাকায় শনিবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে।

নির্বাচনে একটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা, সদরের নয়টি ইউনিয়ন ও শ্রীপুরের আটটি ইউনিয়নের ১৪০টি কেন্দ্রে মোট তিন লাখ ২৪ হাজার ভোটার রয়েছেন।

দুই দশক আগে এ জেলায় উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার দাবি উঠেছিল, তাই একই এলাকায় ফের উপনির্বাচন নিয়ে ভাবনায় রয়েছে বর্তমান নির্বাচন কমিশনও।

১৯৯৪ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় মাগুরা-২ আসনের ওই  উপনির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ ওঠে। এরপর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আন্দোলনের মুখে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি সংবিধানে যোগ করতে বাধ্য হয়েছিল বিএনপি।

এবারের উপনির্বাচনে সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে ভোটগ্রহণের জন্য ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা মুজিবুর বলেন, কমিশন মাগুরা-১ আসনের উপ-নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মডেল হিসেবে দেখতে চায়।

ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনার জাভেদ আলী ভূইয়া ও খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি এসএম মনিরুজ্জামান মাগুরায় এসে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত সব বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে সভা করেছেন।

নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করলে কোনো প্রার্থীকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানান খুলনা বিভাগীয় অঞ্চলের এই আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা।

এ আসন থেকে পরপর চার বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোহাম্মদ সিরাজুল আকবর গত ৯ মার্চ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে আসনটি শূন্য হয়।

এরপর ৩০ মে ভোটগ্রহণের দিন রেখে নির্বাচন কমিশন এ আসনে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে, যাতে মোট চারজন প্রার্থী প্রতিদ্ধন্দ্বিতা করছেন।

এরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত মুক্তিযুদ্ধে সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আব্দুল ওয়াহহাব (নৌকা), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান কাজী তৌহিদুল আলম (আম), বাংলাদেশ ন্যাশনাল ফ্রন্ট’র (বিএনএফ) মাগুরা জেলা সাধারণ সম্পাদক মুতাসিম বিল্লাহ রিফাত (টেলিভিশন) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক তপন কুমার রায় (সিংহ)।

নির্বাচনে বিএনপি ও সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির কোনো প্রার্থী অংশ না নেওয়ায় এটি অনেকটা এক তরফা নির্বাচনে পরিণত হয়েছে, যাতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন বলে মনে করছেন কেউ কেউ।

তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের তারা হালকাভাবে দেখছেন না বলে জানান দলটির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ কুণ্ডু।

তিনি বলেন, “এ কারণে উপ-নির্বাচন ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করতে আমরা ব্যাপক সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগসহ প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছি।”

তাছাড়া প্রার্থীকে নিয়ে দলীয় কোনো বিভাজন না থাকায় এবং ভোটারদের ‘ব্যাপক সাড়া পাওয়ায়’ নিজেদের প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়ী হবে বলে আশাবাদী তিনি।

অধিকাংশ ভোটার এ উপ-নির্বাচনকে অনেকটা নিয়ম রক্ষার নির্বাচন হিসেবে দেখছেন।

শহরের জেলা পাড়ার বাসিন্দা মুক্ত রহমান বলেন, “নির্বাচন মানেই গণসংযোগ, মাইকিংয়ে প্রচার-প্রচারণা, ব্যানার পোস্টার। সব মিলিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ। কিন্তু সেটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।”

প্রচার-প্রচারণার সময় শেষ হলেও তাদের পাড়ায় কোনো প্রার্থী বা তাদের পক্ষে কেউ ভোট চাইতে আসেনি বলে জানান মুক্ত।

প্রায় একই ধরনের মন্তব্য করেন ইসলামপুর পাড়ার বাসিন্দা বিবেক বিশ্বাস, যার বাড়ির কাছে নৌকা প্রতীকের একটি নির্বাচনী ক্যাম্পও হলেও সেটিকে বেশিরভাগ ফাঁকা পড়ে থাকতে দেখেছেন বলে জানান তিনি।