বরগুনার আমতলী উপজেলার চুনাখালী গ্রামের মানুষের সঙ্গে পরিবারের সদস্যরাও ‘ধর্ষক ছেলের’ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন।
তুষারের বাবা আবদুল মান্নান খান ছেলের ‘কুকীর্তিতে’ লজ্জা, হতাশা আর গ্লানিতে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মুই আর কুলাঙ্গার পোয়ার মুখ দেখতে চাই না। ক্যান যে আল্লায় মোরে এহনও বাঁচাইয়া রাখছে হেইডা কইতে পারি না। মোর আগে যেন ওই শয়তানডা মইরা যায়।”
গত ২১ মে রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কের এক দোকানের বিক্রয়কর্মী এক গারো তরুণীকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে দেড় ঘণ্টা ধরে ধর্ষণ করে কয়েকজন।
এরপর তুষার (৩৫) ও জাহিদুল ইসলাম লাভলু (২৬) নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ধর্ষণের কথা স্বীকার করে বলে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
শুক্রবার আমতলীর চুনাখালী গ্রামে তুষারদের বাড়িতে গেলে সাংবাদিক আসার খবর শুনে সেখানে ভিড় করেন গ্রামের অনেক নারী-পুরুষ।
মান্নান খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তার ছয় সন্তানের মধ্যে তুষার মেজ। পূর্ব চুনাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর সে চুনাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও মা রেণু বেগমের মৃত্যুর পর তুষারের আর লেখাপাড়া হয়নি।
১৯৯৯ সালে তুষার ঢাকায় পাড়ি জমান এবং গাড়ি চালানো শিখে চাকরি নেন। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে তিনি ঢাকার ‘সিগনেট’ বায়িং হাউজে গাড়িচালক হিসেবে কাজ করছিলেন।
তুষারের চাকরির টাকায় সংসারের অভাব কিছুটা ঘুচলেও তার ‘জঘন্য অপরাধ’ কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তার বাবা।
তুষারের সৎ মা ফাতেমা বেগম বলেন, “মাইনষের কাম কইরা গুরাগাড়া লইয়া কোনো রহম খাই। তুষার মাসে দেড়-দুই হাজার ট্যাহা দিত, হেইয়া ওর বাপের অসুখের পেছনে খরচ অইয়া যায়। অসুস্থ স্বামী, কোনো কাম করতে পারে না।
“ও যে কাম করছে, হ্যার বিচার অওন দরকার,” বলেন তিনি।
কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, ধর্ষণের ঘটনার পরদিন তুষার বাড়ি যান। অল্প সময় থেকে কাউকে কিছু না বলে আবার চলেও যান।
প্রতিবেশী সেলিনা বেগম বলেন, “তুষার যেই অপরাধ করছে হ্যার বিচার অওয়া উচিত। মোগো গারামের পোলা বইল্লা ভালো কমু না।”
তুষারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন চুনাখালী গ্রামের কৃষক জয়নালও।
আমতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জিএম দেলওয়ার হোসেন বলেন, তুষারের অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য। তার শাস্তি হওয়া দরকার।