ধর্ষণের আলামত নষ্ট: রাঙ্গুনিয়ার ওসির বিরুদ্ধে মামলা খারিজ

ধর্ষণের মামলা থাকার যুক্তি দেখিয়ে আলামত নষ্টের অভিযোগে রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি ও এক উপ-পরিদর্শকের বিরুদ্ধে ধর্ষিতের মায়ের করা মামলা খারিজ করে দিয়েছে চট্টগ্রামের আদালত।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 May 2015, 09:39 AM
Updated : 28 May 2015, 09:39 AM

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মীর শফিকুল আলম এই আদেশ দেন। ওই আদালতে একদিন আগেই মামলা করেছিলেন ধর্ষিতের মা।  

গত সোমবার একই ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণের অভিযোগে প্রতিবেশী শাহ আলমের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন এই বাদী। এর আগে ৯ মে বাদীকে দিয়ে ‘জোর করে’ নিজের কিশোর ছেলের বিরুদ্ধে একই ঘটনায় আরেকটি মামলা করানোর অভিযোগ রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি ও এসআইয়ের বিরুদ্ধে।

তার আইনজীবী এরশাদুর রহমান রিটু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আদালত আদেশে বলেছেন- দুটি মামলাই তদন্তাধীন। ঘটনার সত্যাসত্য নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত আরেকটি মামলা গ্রহণ সম্ভব নয়। এ কারণে আদালত ওসি ও এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলাটি খারিজ করেছেন।”

এই মামলায় ধর্ষণের আলামত নষ্টের অভিযোগ আনা হয়েছিল ওসি হুমায়ুন কবির এবং শিলক ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মজিবর রহমানের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি কিশোরীর মায়ের দেওয়া প্রথম অভিযোগ ছিঁড়ে ফেলে কিশোরীর ১৪ বছরের ভাইকে ১৮ বছর বয়স দেখিয়ে ভুয়া মামলা করতে বাধ্য করার অভিযোগও আনা হয়েছিল এজাহারে।

ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে ওই কিশোরীর ভাইকে আসামি করে জোর করে পুলিশের মামলার অভিযোগ এনে একটি রিট আবেদনে হাই কোর্ট এ নিয়ে একটি রুল দিয়েছিল।

হাই কোর্ট স্থানীয় প্রভাবশালী শাহ আলমকে আসামি করে কিশোরীর মায়ের মামলাটি নিতে নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি ওই আসামিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়।

শাহ আলমকে (৫৫) বুধবার রাতে নগরীর আন্দরকিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শাহ আলমের বাড়ির গৃহকর্মী হিসেবে কাজের সময় তার দ্বারা ধর্ষিত হয়ে ওই কিশোরী গর্ভবতী হয়ে পড়ে বলে তার পরিবারের অভিযোগ।

কিশোরীর পরিবারের দাবি, শাহ আলমের পরিবারের পরামর্শ অনুযায়ী চলতি মে মাসের শুরুতে রাঙ্গুনিয়ার মরিয়ম নগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গর্ভপাত ঘটানো হয়।

এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে গত ৮ মে থানায় শাহ আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে যান কিশোরীর মা। তবে সেদিন শাহ আলমকে আটকের পর ছেড়ে দেওয়া হলেও সে দিনই কিশোরীর ভাইকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ঘটনাটি সংবাদপত্রে এলে তা যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া একটি রিট আবেদন করলে গত ২৫ মে হাই কোর্ট শাহ আলমকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়।

ওই কিশোরীর মায়ের মামলা নিতে পুলিশের অস্বীকার করা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং শাহ আলমসহ আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে রুলও দেওয়া হয়।

এরপর গত সোমবার চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ শাহ আলমের বিরুদ্ধে মামলা করেন কিশোরীর মা। ওই মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতেও রাঙ্গুনিয়া থানাকে নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।