সিএসআইডির শিক্ষার্থীদের আনন্দ মেলা

নাচ,গান, আবৃত্তি আর অভিনয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেছে সেন্টার ফর সার্ভিসেস অ্যান্ড ইনফরমেশন অন ডিজেবিলিটির (সিএসআইডি) শিক্ষার্থীরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 May 2015, 08:16 PM
Updated : 27 May 2015, 08:16 PM

বুধবার রাজধানীর শিশু একাডেমি মিলনায়তনে আনন্দ মেলা বসেছিল সিএসআইডি পরিচালিত স্কুলগুলোর আটশ’ শিক্ষার্থীর, যাদের মধ্যে ছিল প্রতিবন্ধী-অপ্রতিবন্ধী,কর্মজীবী ও পথশিশু।

সকাল থেকেই শিশুদের অংশগ্রহণে নাচ, গান, আবৃত্তি, অভিনয়ে মঞ্চ যেমন মুখর হয়ে ছিল, তেমনি দর্শক সারি মুখরিত ছিল স্কুলের শিক্ষার্থীদের করতালিসহ সরব অংশগ্রহণে।

অনুষ্ঠানের পুরোটা সময়জুড়ে ছিলেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়াসহ বেশ কয়েকজন অতিথি। তবে শিশুদের জন্য আয়োজিত এ দিনটিতে মঞ্চের দখল শিশুদের হাতেই ছেড়ে দেন তারা।

১৮ শিশুর পরিবেশনায় সমবেত দেশাত্মবোধক গান ‘সূর্যদয়ে তুমি, সূর্যাস্তে তুমি’ দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান।

এরপর ‘পাহাড়িয়া সাপের নাচ’ পরিবেশন করে ডাউন সিনড্রোম আক্রান্ত শিক্ষার্থী ইভা, দ্বৈত নৃত্য পরিবেশন করে ইসমাইল ও ফাহিমা এবং ফারজানা ও বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শারমিন।

আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর ‘মাগো ওরা বলে’ আবৃত্তি করে শোনায় তানমী। দীপ্তা চক্রবর্তী গেয়ে শোনায় ‘হা রে রে রে রে,আমায় ছেড়ে দে রে, দে রে’।

অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করে শিক্ষার্থী মো.জসীম উদ্দিন।

অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে সিএসআইডির প্রতিষ্ঠাতা মনসুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, “ঢাকা শহরের শিশুদের ভালো কিছু দেওয়ার চেষ্টাই করে যাচ্ছি আমরা, যাতে তার অর্থাৎ তোমরা তোমাদের জীবনটা সুন্দর করে গড়ে তুলতে পার।”

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মনসুর আহমেদ এরপর সিএসআইডির নির্বাহী পরিচালক খন্দকার জহুরুল আলমের অনুরোধে ‘মায়াবন বিহারিণী’ গানটির দুই লাইন গেয়ে শোনান।

এরপর সিএসআইডি স্কুলের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষক মো.মনির হোসেন কয়েকটি গান গেয়ে পুরো মিলনায়তন মাতিয়ে তোলেন। শিশুরা যার যার আসনে থেকেই নেচে-গেয়ে উদ্দাম আনন্দে মেতে ওঠে গানের সাথে।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া বলেন,“প্রতিবন্ধী শব্দটি ব্যবহার করতে আমার মোটেই ভালো লাগে না, কষ্ট হয়। কারণ তোমরা আমাদেরই সন্তান।তোমরা পড়াশোনা শিখে বড় হয়, জীবনকে সুন্দর করে গড়ে তোলো সেই প্রত্যাশাই করি।”

অনুষ্ঠানে সিএসআইডির নির্বাহী পরিচালক খন্দকার জহুরুল আলম জানান, মিলনায়তনে উপস্থিত আটশ’ শিশুর সবাই এবছর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা দিবে।

অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার অধীনে হলেও সরকার তাদের রেজিস্ট্রেশনের খরচ মওকুফ করে দেওয়ায় এটা সম্ভব হয়েছে বলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

সিএসআইডির স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের পাঁচ বছর মেয়াদি প্রকল্পের অধীনে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়।একটি ব্যাচ পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা সম্পন্ন করার পরে আবার নতুন করে পাঁচ বছরের প্রকল্পে শিশুদের সিএসআইডি স্কুলে ভর্তি করা হয়।

সেইভ দ্য চিলড্রেনের সহযোগিতায় আয়োজিত এ আনন্দ মেলায় অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য কবি কাজী রোজী, শিশু একাডেমীর পরিচালক মোশাররফ হোসেনসহ জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরাম ও বেশ কিছু সহযোগী সংগঠনের কর্মকর্তারা।