এই আবেদনটি বৃহস্পতিবার মীর কাসেমের আপিলের সঙ্গে আপিল বিভাগের কার্যতালিকার শীর্ষে রয়েছে।
বুধবার বিকালে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, মীর কাসেম আলীর করা আপিল ও এর সঙ্গে সময় চেয়ে করা একটি আবেদন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় আদেশের জন্য এক নম্বর ক্রমিকে রয়েছে।
বেঞ্চের অপর তিন সদস্য হলেন-বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
গত ২২ এপ্রিল একই আদালত মীর কাসেম আলীর আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দিতে আসামিপক্ষ সময় বেঁধে দিয়েছিল। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে প্রসিকিউশনকেও আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দিতে বলা হয়।
কাসেম আলীর আইনজীবী শিশির মনির সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম বলেন, “আপিল বিভাগ ২৮ মের মধ্যে সারসংক্ষেপ জমা দিতে আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষকে সময় বেঁধে দেন। এই সময়ের মধ্যে দিতে পারছি না বলে আরও চার সপ্তাহ সময় চেয়ে আসামিপক্ষ আবেদনটি করে।”
এই সময়সীমা বৃহস্পতিবার শেষ হচ্ছে বলে পরবর্তী আদেশের জন্য বিষয়টি কার্যতালিকায় এসেছে বলে জানান শিশির মনির।
জামায়াতে ইসলামীর নেতা মীর কাসেম আলীকে গত বছর ২ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। ওই দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে গত ৩০ নভেম্বর আপিল করেন তিনি, যাতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে খালাস চান তিনি।
মানবতাবিরোধী অপরাধের ১৪টি অভিযোগের মধ্যে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিন আহমেদসহ আটজনকে হত্যায় সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হওয়ায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কাসেমের ফাঁসির রায় আসে ট্রাইব্যুনালে।
মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোতে রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর কেন্দ্রীয় কমান্ডার হিসাবে মীর কাসেম চট্টগ্রাম অঞ্চলে সরাসরি মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত ছিলেন বলে আদালতের রায়ে উঠে আসে।
পঁচাত্তরে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর জিয়াউর রহমান জামায়াতকে স্বাধীন বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেন। ১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ছাত্রসংঘ নাম বদলে ইসলামী ছাত্রশিবির নামে বাংলাদেশে রাজনীতি শুরু করলে মীর কাসেম তার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হন।
এরপর রাজনৈতিক ও আর্থিক ক্ষেত্রে অসাধারণ ধূর্ততার স্বাক্ষর রেখে অত্যন্ত দ্রুততায় নিজের ও দলের উন্নতি ঘটান কাসেম, পরিণত হন জামায়াতের আর্থিক মেরুদণ্ডে।
মীর কাসেম আলীর নেতৃত্বে চট্টগ্রামে যে ভবনটিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষের লোকদের ধরে নিয়ে নির্যাতন চালানো হত, সেই ডালিম হোটেলকে রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে ‘ডেথ ফ্যাক্টরি’।
একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০১২ সালের ১৭ জুন গ্রেপ্তার করা হয় জামায়াতের এই কেন্দ্রীয় নেতাকে। পরের বছর ৫ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে তার বিচার শুরু হয়।