পাইলিং ত্রুটিতে ধস: মন্ত্রী

রাজধানীর কারওয়ানবাজারে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের নির্মাণাধীন টুইন টাওয়ারের পাইলিংয়ে ‘অসামঞ্জস্যের’ কারণে পাশের সড়কে ধস হয়েছে বলে মনে করছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 May 2015, 05:43 PM
Updated : 27 May 2015, 05:43 PM

বুধবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এখানে এসে যা দেখলাম, তাতে মনে হল পাইলিংয়ে অসামঞ্জস্য রয়েছে। এটা আমি ইঞ্জিনিয়ারিং পয়েন্ট অব ভিউ থেকে বললাম।”

সকালে বৃষ্টি শুরুর পর কাওরানবাজারের বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক লাগোয়া হোটেল সুন্দরবন ও নির্মাণাধীন ভবনের মাঝের গলিপথের একেবারে শুরু থেকে প্রায় ১২০ ফুট রাস্তার তলার মাটি বৃষ্টিতে আলগা হয়ে ধস নামে।

সুন্দরবন হোটেলের সীমানা প্রাচীর ও বেইজমেন্টের দেওয়াল, গলির মুখের বিদ্যুতের খুঁটি, কয়েকটি গাছ, ফুটপাতের একটি অংশ এবং সেখানে থাকা কয়েকটি টং দোকান ও রিকশা ভ্যান ওই গর্তে পড়ে যায়।

এ ঘটনায় সুন্দরবন হোটেল ঝুঁকির মধ্যে পড়ায় ফায়ার সার্ভিসের পরামর্শে তাৎক্ষণিকভাবে অতিথিসহ সবাইকে ছয়তলা হোটেল ভবন থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

সুন্দরবন হোটেল কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা পাইলিং নিয়ে আগে থেকে সতর্ক করলেও ন্যাশনাল ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তা আমলে নেয়নি। নির্মাতা প্রতিষ্ঠান যে পাইলিংয়ের ক্ষেত্রে যথাযথ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়নি, তা ফায়ার ব্রিগেড কর্মকর্তাদের কথাতেও এসেছে।

ফাইল ছবি

তবে নির্মাণ কাজের দায়িত্বে থাকা এম এস কনস্ট্রাকশনস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের কোনো ‘ভুল ছিল না’।

ঘটনার পরপর বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে  বালি দিয়ে গর্ত ভরাটের কাজ শুরু করে ভবন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান।

এই ধসের জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ‘অবহেলা’ এবং বহুতল ভবনটি নির্মাণের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ‘অনিয়মের’ অভিযোগ এনে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও স্থানীয় সাংসদ।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাংসদ ফজলে নূর তাপস বলেন, “রাজউকের দায়িত্ব রাজধানীর সকল নির্মাণ কাজ তদারক করা। এক্ষেত্রে রাজউক চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। যে প্রতিষ্ঠান নির্মাণ চালাচ্ছে তারাও যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়নি।”

তবে সাংসদের পরিদর্শনের পরই ঘটনাস্থলে আসা গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, “রাজউকের অতবড় জনবল নেই যে একটা নকশা অনুমোদন করার পর তারা আবার তদারক করবে। যারা ভবনের মালিক তাদেরই এটা তদারকির দায়িত্ব।”

রাজউকের তদন্ত কমিটি

পাইলিংয়ের পাশে ধসের ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিত করতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।

২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলে জানান গণপূর্তমন্ত্রী।

ভবন নির্মাণের দায়িত্বে থাকা এম এস কনস্ট্রাকশনস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের প্রকল্প পরিচালক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, রাজউক, ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে বুধবারই ৫০০ ট্রাক বালু ফেলা হচ্ছে। তিন দিনে ১৫শ’ ট্রাক বালু ফেললে ‘সমস্যার সমাধান’ হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত সুন্দরবন হোটেলের কোনো পিলারে ফাটল দেখা দেয়নি। আপাতত এখানে বালু ফেলার কাজ চলছে।

“আশা করছি দ্রুত এই জায়গাটা ঝুঁকিমুক্ত বলে ঘোষণা করতে পারব।”