জাহাঙ্গীরনগরে ছাত্রলীগের মারামারি, সহকারী প্রক্টর লাঞ্ছিত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি কাজের দরপত্রের টাকার বাটোয়ারা নিয়ে ছাত্রলীগের ‍দুই পক্ষের মারামারি থামাতে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন একজন সহকারী প্রক্টর।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2015, 04:34 PM
Updated : 27 May 2015, 04:32 AM

মঙ্গলবার বিকালে এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে মীর মোশাররফ হোসেন হল এবং আ ফ ম কামাল উদ্দিন হলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সশস্ত্র অবস্থায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে।

সেখানে সহকারী প্রক্টর গিয়েও বিফল হওয়া পর সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠনটির বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি মাহমুদুর রহমান জনি এবং সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ রাসেলের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

জনি সাংবাদিকদের বলেন, “একটি তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে উত্তেজনা শুরু হয়েছিল। তবে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে।”

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আবুল হোসেন বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় প্রক্টরিয়াল টিমকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সহকারী প্রক্টর মো. জুলকারনাইন এবং তার সঙ্গে দুই সাংবাদিককে লাঞ্ছনাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা বলেন, “পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

ক্যাম্পাসে সাম্প্রতিক সময় ঝড়ে পড়ে যাওয়া এবং মরে যাওয়া বিভিন্ন গাছ কাটার জন্য মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ে দরপত্র চূড়ান্ত হয়।

তা নিয়েই ছাত্রলীগের দুই পক্ষের গোলযোগ বাঁধে বলে ছাত্রলীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নেতা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত তথ্য ও গবেষণা উপ-সম্পাদক মীর মশাররফ হোসেন হলের শিক্ষার্থী আব্দুর রহিম জুয়েল সাহিত্য সম্পাদক সানোয়ার হোসেনকে দিয়ে সাভারের এক কাঠ ব্যবসায়ীর মাধ্যমে ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকায় এই দরপত্র পায়। 

“তার কাছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রুপের নেতা উপ-অর্থ সম্পাদক জুয়েল রানা টাকার ভাগ দাবি করে। কিন্তু জুয়েল টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের মাঝে তর্কাতর্কি হয়।

“জুয়েল এক পর্যায়ে কামাল উদ্দিন হল ছাত্রলীগ নেতা রানাকে ধাক্কা দেয়। তখন কামাল উদ্দিন হলের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা জুয়েলকে মারধর করে। আর এই নিয়েই দুই হলের নেতা-কর্মীরা মুখোমুখি অবস্থান নেয়।”

জুয়েলকে মারধরের খবর শুনে বেলা আড়াইটার দিকে মীর মোশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা রড, পাইপ, হাসুয়া, রামদা প্রভৃতি অস্ত্র নিয়ে কামাল উদ্দিন হলের দিকে ছুটে যায়। তখন কামাল উদ্দিন হলের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরাও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দৌড়ে আসে। 

দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় ছবি তুলতে গেলে মীর মোশাররফ হলের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হন সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মো. জনি আলমসহ দুই সাংবাদিক।

তারা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আরাফাত ও তাপস এবং দর্শন বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী লায়েবের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।

ওই সময় সহকারী প্রক্টর সিকদার মো. জুলকারনাইনও ছাত্রলীগকর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হন। 

এরপর ছাত্রলীগ সভাপতি জনি ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব গিয়ে উভয় পক্ষের নেতাদের সঙ্গে কথা বলার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়। এরপর দুই হলের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা নিজেদের হলে ফিরে যান।