মাগুরার ১০ মালয়েশিয়াগামী নিখোঁজ

মাগুরা সদর ও শালিখা উপজেলার পাঁচ গ্রামের ১০ ব্যক্তি মালয়েশিয়া যাওয়ার উদ্দেশে যাত্রা করার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন বলে স্বজনরা জানিয়েছেন।

মাগুরা প্রতিনিধিঅলক বোস, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2015, 11:52 AM
Updated : 26 May 2015, 11:52 AM

সদরের ডেফুলিয়া এবং শালিখা উপজেলার জুনারী, হাজরাহাটি, দিঘলগ্রাম ও দিঘি গ্রাম থেকে এ যুবকরা মালয়েশিয়া যাত্রা করেছিলেন দালালের মাধ্যমে।

নিখোঁজরা হলেন সদর উপজেলার ডেফুলিয়া গ্রামের ইমরান শেখ (২০), শাহীন হোসেন (২০) ও ইমরান মোল্যা (২৩)।

শালিখার জুনারী গ্রামের ফখর আলীর ছেলে টিটুল সরদার (১৮), ভাতিজা শরাফত হোসেন (২৫), শ্যালক ইসলাম আলী, হাজরাহাটি গ্রামের শুকুর আলী, দিঘি গ্রামের ইকরাম হোসেন (৪৮), আল আমীন (১৮) এবং দিঘল গ্রামের নান্নু মিয়া (৩৫)।

তারা প্রত্যেকে স্থানীয় কয়েকজন দালালকে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা দিয়ে নদীপথে মালয়েশিয়া যাত্রা করেন। তারপর তাদের খোঁজ নেই বলে স্বজনরা জানান।  

জুনারী গ্রামের নিখোঁজ শরাফতের স্ত্রী ফিরোজা বেগম জানান, কাঠমিস্ত্রি হিসেবে অধিক উপার্জনের আশায় তার স্বামী দেড় বছর আগে জুনারীর দালাল দোলন, নাজমুল ও রাজুকে দেড় লাখ টাকা দিয়ে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে বাড়ি ছাড়েন।

তারপর থেকে তার কোনো খোঁজ মেলেনি। এখন তিন সন্তান নিয়ে তিনি পথে পথে ঘুরছেন বলে জানান।

আল আমীনের মা জরিনা বেগম কাঁদতে কাঁদতে জানান, দিঘি গ্রামের দালাল আজিজুল অনেকটা ফুসলিয়েই তার ছেলেকে নৌপথে মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে নিয়ে যায়।

ছেলেকে খুঁজতে এ পর্য়ন্ত তিনি বিভিন্ন প্রতারণার ফাঁদে পড়ে আরও দুই লাখ টাকা খরচ করেছেন। কিন্তু একমাত্র ছেলের কোনো খোঁজ পাননি বলে জানান।

নিখোঁজ ইকরাম হোসেনের ছেলে সোহেল জানান, তার বাবাকে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ দেওয়ার কথা বলে আজিজুল ২ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়েছে। পরে মালয়েশিয়া নেওয়ার কথা বলে ১৬ মাস আগে বাড়ি থেকে নিয়ে গেছে। তারপর থেকে তার বাবা নিখোঁজ।

তারা একাধিকবার আজিজুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। সে প্রথমে নানা কথা বলে ঘুরিয়েছে। পরে ঢাকার উত্তরার একটি বাসায় ডেকে নিয়ে হত্যার তাকে হুমকি দিয়েছে। বর্তমানে তার ফোন বন্ধ এবং সে পলাতক।

সোহেল জানান, কিছুদিন আগে অজ্ঞাত এক ব্যক্তিকে তার বাবা সাজিয়ে আজিজুল ফোন দিয়ে বাড়িতে তার মুক্তি বাবদ আরও এক লাখ টাকা চেয়েছিল। কিন্তু ফোনে ওই ব্যক্তিকে চিনে ফেলায় সে ফোন কেটে দেয়।

মাগুরা সদরের ডেফুলিয়া গ্রামের ইমরান শেখ ও ইমরান মোল্যা শাহিন হোসেন মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন দেড় মাস আগে।

রাজ্জাক নামে এক দালালের মাধ্যমে তাদের মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে মাগুরা জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ের প্রবাসী কল্যাণ শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার মো. নাকিব হাসান তরফদার জানান, প্রশাসনিকভাকে নিখোঁজদের বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। ভুক্তভোগীদের উচিত নিখোঁজ স্বজনদের বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো।

মাগুরার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায় বলেন, ইতিমধ্যে মানব পাচারকারী সন্দেহে রবিউল ওরফে রানা নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ চেষ্টা করছে গোটা চক্রকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে।