উপনির্বাচন: মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ইসির নালিশ

আচরণবিধি লঙ্ঘন করে মাগুরা-১ উপনির্বাচনে সরকার দলীয় প্রার্থীর পক্ষে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় মন্ত্রিপরিষদকে চিঠি দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।

মঈনুল হক চৌধুরী জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 May 2015, 01:55 PM
Updated : 24 May 2015, 02:27 PM

প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রিটার্নিং কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিমন্ত্রীর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে।”

আগামী ৩০ মে মাগুরা-১ আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, মন্ত্রী, প্রধান হুইপ, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধী দলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধী দলীয় উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী বা সমমর্যাদার ব্যক্তিরা আচরণবিধি অনুযায়ী প্রার্থীর প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। তালিকায় মেয়র ও সাংসদরাও রয়েছেন।

বিধি লঙ্ঘনে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড ও পঞ্চাশ হাজার টাকা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।

প্রতিমন্ত্রীর আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে রোববার মাগুরা-১ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মজিবুর রহমান ইসি সচিব বরাবার নির্দেশনা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন।

জানতে চাইলে খুলনার এ আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী নির্বাচনী এলাকার সার্কিট হাউজে অবস্থান করেছেন এবং জেনেছি তিনি প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন, যা আচরণবিধি লঙ্ঘন। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ইসির কাছে নির্দেশনা চেয়েছি।”

এ কর্মকর্তা জানান, প্রতিমন্ত্রী ইতোমধ্যে দুই দিন প্রচারণা চালিয়ে ঢাকায় ফিরেছেন। আবার মাগুরায় এসে সার্কিট হাউজে অবস্থান ও প্রচারণায় অংশ নেওয়ার কথাও জানা গেছে।

“তাই আচরণবিধি মেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কমিশনকে জানিয়েছি।”

এ বিষয়ে মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার আচরণবিধি লঙ্ঘন করেননি বলে দাবি করে বলেন, নির্বাচনী এলাকায় যেতে পারবো না এরকম কথা তো বিধিতে নেই।

তিনি বলেন, “আমি দুই দিন সেখানে ছিলাম। ভোটের আগে আবারও যাব। আচরণবিধির বিষয়ে আমি সজাগ আছি। নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তবে কারো প্রচারণায় অংশ নিইনি।”

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয় শাখার সহকারী সচিব রাজীব আহসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ইসির অনুমোদনের পর প্রতিমন্ত্রীর আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞার কাছে চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হবে। শিগগির বিশেষ বাহক মারফত তা পাঠানো হবে।”

ইসি কর্মকর্তারা জানান, যুব প্রতিমন্ত্রীর পাশাপাশি সরকারের যে কোনো সুবিধাভোগীর প্রচারণায় অশ নেওয়ার বিষয়ে বিধিনিষেধ তুলে ধরে  ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ডিও জারি করে এ চিঠি দেওয়া হবে।

নির্বাচন কমিশনার জাবেদ আলী ও ইসি সচিব বর্তমানে মাগুরা সফরে রয়েছেন।

এই আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা এ টি এম আবদুল ওয়াহ্হাব, এনপিপির কাজী তৌহিদুল আলম, কে এম মোতাসিম বিল্লাহ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী তপন কুমার রায় প্রার্থী হয়েছেন।

বর্তমান ইসির অধীনে উপজেলা ও সিটি নির্বাচনে সরকারি সুবিধাভোগীদের আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচারে অংশ নেওয়া ঘটনা ঘটে। সদ শেষ হওয়া তিন সিটি নির্বাচনেও এ বিষয়ে মন্ত্রীদের সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের কথা রয়েছে।

ওসি ও এসআই বদলি

নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, রিটার্নিং কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে মাগুরা-১ নির্বাচনী এলাকার মাগুরা সদর থানার উপ পরিদর্শক মানিক গাইন ও শ্রীপুর থানার ওসিকে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা মজিবুর রহমান জানান, এই দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব ও ভোটারকে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। নির্বাচনী কাজে সহায়তা না করায় তাদেরকে বদলি করার জন্যে কমিশনে আবেদন করা হয়েছে।