কাজের লোক সেজে চুরি: চট্টগ্রামে গ্রেপ্তার ৪

চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এক দম্পতিসহ  চার জনকে, যারা কাজের লোক হিসেবে বাসায় ঢুকে স্বর্ণালংকার, টাকা পয়সা ও মূল্যবান জিনিস হাতিয়ে নিত বলে পুলিশ জানিয়েছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 May 2015, 11:06 AM
Updated : 24 May 2015, 11:26 AM

চকবাজার থানার ওসি আজিজ আহমদ জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নগরীর পাঁচলাইশে এক বিচারিক হাকিমের বাসাসহ বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ২০টি বাসায় এ ধরনের চুরি করার কথা স্বীকার করেছে।

শনিবার থেকে বাকলিয়া ও বায়েজিদ এলাকায় চলা পুলিশের ওই অভিযানে গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- পারভীন আক্তার (৩২), তার স্বামী মো. শহীদ (৩৬), রেহেনা বেগম (৩২) ও মো. মফিজ (৪৮)।

এরা সবাই ভোলা জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।

তাদের কাছ থেকে চুরি করা ১২ ভরি ১২ আনা ওজনের তিনটি স্বর্ণের পাতও উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

ওসি আজিজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, নগরীতে এ ধরনের চোরদের দুটি চক্র আছে। এদের একটি ‘বরিশাল গ্রুপ’ ও অন্যটি ‘ভোলা গ্রুপ’ হিসেবে পরিচিত। গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই ভোলা গ্রুপের।

ভোলা গ্রুপে মোট আট সদস্যের মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, “অন্য চার জন এবং বরিশাল গ্রুপের সদস্যদের ধরার চেষ্টা করছে পুলিশ।”

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, “গ্রেপ্তার পরভীন ও রেহেনা কাজের লোক সেজে বিভিন্ন বাসায় যায়। সেখানে গিয়ে তারা কাজ নেয় এবং কাজের ফাঁকে কৌশলে অথবা বাসার লোকজনকে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে অচেতন করে স্বর্ণালংকারসহ নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।”  

“পরে দুই নারী কাজের নামে বাসায় ঢুকলে অন্য পুরুষরা বাড়ির নিচে অপেক্ষায় থাকে। নারীরা চুরি করে আসার পর একসঙ্গে তারা চলে যায়।”

এদিকে, এই চারজনকে গ্রেপ্তারের পর বিচারিক হাকিমের পরিবারের সদস্যরাসহ মোট চারটি বাসার লোকজন তাদের শনাক্ত করেছে বলেও পুলিশ কর্মকর্তা আজিজ জানিয়েছেন।

এ ঘটনায় অভিযানের দায়িত্বে থাকা নগর পুলিশের কোতোয়ালী জোনের সদ্য বিদায়ী সহকারী কমিশনার শাহ মোহাম্মদ আব্দুর রউফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, গত ২০ জানুয়ারি এমএম আলী রোডে আশিকুর রহমান নামে এক ব্যক্তির বাসায় কাজে যায় পরভীন ও রেহেনা।

পরের দিন কাজে গিয়ে ওই বাসা থেকে বিভিন্ন ধরনের ১০ ভরি স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে যায়।

এই ঘটনায় চকবাজার থানায় একটি মামলা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, মামলার তদন্ত করতে গিয়ে বিচারিক হাকিমের বাসায় চুরি হওয়ার ঘটনাটিও পাওয়া যায়।

পুলিশ কর্মকর্তা রউফ আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে শহীদ দেলনেতা। সে তার স্ত্রীকে এবং ভাড়া করা নারীদের এই কাজে ব্যবহার করে।

“কোন বাসা থেকে চুরির পর তারা স্বর্ণালংকারগুলো গলিয়ে পাত হিসেবে তৈরি করে। এধরনের ১২ ভরি ১২ আনা ওজনের তিনটি পাতও উদ্ধার করা হয় তাদের কাছ থেকে।”   

তিনি বলেন, “চোর চক্রের নারীরা একটি এলাকায় প্রথমে রেকি করে সুবিধাজনক বাসা শনাক্ত করে এবং সেখানে কাজের লোক হিসেবে ঢুকে।”

একটি এলাকায় একবার চুরির পর ওই এলাকায় এই নতুন নারীদের পাঠানো হয়।

এছাড়া বড় কোন ধরনের চুরি করতে পারলে তারা সবাই ভোলা চলে যায়। কয়েকমাস সেখানে থাকার পর নগরীতে এসে আবার চুরির কাজে জড়িয়ে পড়ে বলেও রউফ জানান।