বার কাউন্সিল নির্বাচন : আপিল বিভাগের আদেশ ২৮ মে

আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক ও তদারক সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচন স্থগিত করে দেওয়া হাই কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন শুনে আদেশের জন্য ২৮ মে দিন রেখেছে আপিল বিভাগ।

সুপ্রিম কোর্ট প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 May 2015, 09:04 AM
Updated : 24 May 2015, 03:25 PM

প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের বেঞ্চ রোববার এ বিষয়ে পৃথক আবেদনের শুনানি করে আদেশের এই দিন রাখে।

তফসিল অনুযায়ী ২৭ মে এ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল।

দুটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২১ মে  হাই কোর্ট রুলসহ ওই নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করে দেয়। 

এ আদেশ স্থগিত চেয়ে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের পক্ষে সচিব এবং কাউন্সিলের এবারের নির্বাচনে তিন প্রার্থী এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার এম বদরুদ্দোজা দুটি আবেদন নিয়ে চেম্বার বিচারপতির আদালতে যান।

এর পরিপ্রেক্ষিতে চেম্বার বিচারপতি আবেদন দুটি শুনানির জন্য ২৪ মে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান।

এ ছাড়া বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন আইনজীবীদের মোর্চা সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ  থেকে সদস্য প্রার্থী ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ ও বার কাউন্সিলের বর্তমান কমিটির দুই জন সদস্য (সৈয়দ রেজাউর রহমান ও এইচ আর জাহিদ আনোয়ার) ভোটার তালিকা ত্রুটিমুক্ত করে নির্বাচন চেয়ে রোববার পৃথক আবেদন করেন।

প্রথম দুটি আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী।

নির্বাচিত বর্তমান দুই সদস্যের পক্ষে ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলাম, অপরটির পক্ষে ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ শুনানিতে অংশ নেন।

রিটের পক্ষে আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ নিজেই শুনানি করেন।

শুনানিতে এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্যদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভোটার তালিকা সংশোধন করে প্রকাশ করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী এটা করা হয়েছে।

একই নাম একাধিক স্থানে থাকার বিষয়ে আদালতের প্রশ্নের জবাবে এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, বিভিন্ন বার (সমিতি) থেকে পাঠানো তালিকা অনুযায়ী মূল ভোটার তালিকা করা হয়। সেখানে কিছু ত্রুটি ধরা পড়ায় সংশোধন করে তা প্রকাশ করা হয়েছে।

“কিছু ভোটারের এনরোলমেন্টের তারিখ পাশে লেখা হয়নি। ত্রুটি ধরা পড়ার পর এনরোলমেন্টের তারিখ দিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে। ... তালিকা সংশোধন করায় এখন স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা প্রয়োজন।”

ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম শুনানিতে বলেন, আমরা চাই নির্বাচন হোক। তবে ভোটার তালিকা ত্রুটি যুক্ত। একই নাম একাধিকবার রয়েছে। তাই এ তালিকার ভিত্তিতে নির্বাচনে জালিয়াতির সুযোগ রয়েছে। এ তালিকা সংশোধন করা প্রয়োজন। এ জে মোহাম্মদ আলী একজন প্রার্থী, অথচ তার নেতৃত্বে বার কাউন্সিল ভোটার তালিকা সংশোধন করেছে বলা হচ্ছে। তাই  সংশোধনী নিয়েও প্রশ্ন তোলার সুযোগ রয়েছে।

ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য নির্বাচনে প্রার্থী হননি এমন তিনজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীকে নিয়ে একটি  কমিটি গঠন করার নির্দেশনার আরজি জানান রোকন উদ্দিন মাহমুদ।

তিনি বলেন, এটি সত্যি ভোটার তালিকায় ঝামেলা আছে। আমি নির্বাচনের পক্ষে। একজন ভোটারের একটি ভোট নিশ্চিত করতে হবে।

বার কাউন্সিলের নির্বাচনের তফসিল, ভোটার তালিকা এবং ২০০৩ সালের সংশোধিত বার কাউন্সিল আইনের ৩ নম্বর ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ গত ১৭ মে হাই কোর্টে পৃথক দুটি রিট করেন।

এই রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২১ মে হাই কোর্ট রুলসহ স্থগিতাদেশ দেয়।

এর আগে গত ২৫ মার্চ এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ৯ এপ্রিল ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়, যাতে কাউন্সিলের ভোটার সংখ্যা দেখানো হয় ৪৮ হাজার ৪৬৫ জন।

তবে ভোটার তালিকায় ‘অস্পষ্টতা ও একই ধরনের নাম একাধিকবার’ থাকার কথা জানিয়ে ৯ এপ্রিল কাউন্সিলের পাঁচ নির্বাচিত সদস্য এবং ১০১ জন আইনজীবী আলাদাভাবে বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও সচিবকে চিঠি দেন। চিঠিতে তারা তালিকা ঠিক করতে বলেন।

এরপর কাউন্সিলের পাঁচজন সদস্যের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ১২ মে তলবি সভা করে ভোটের তারিখ ২০ মে থেকে পিছিয়ে ২৭ মে নতুন তারিখ রাখা হয়।

তবে স্থগিতাদেশের কারণে ওই তারিখেও এ নির্বাচন হচ্ছে না।