যৌন নিপীড়ন: জাহাঙ্গীরনগরের ৫ ছাত্র বহিষ্কার

পহেলা বৈশাখে এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের দায়ে পাঁচ শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 May 2015, 03:39 PM
Updated : 23 May 2015, 09:17 PM

বহিষ্কৃতরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।

শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেটের এক সভায় তাদের চিরতরে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয় বলে নিবন্ধক আবু বকর সিদ্দিক জানিয়েছেন।

বহিষ্কৃতরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের ৪২তম ব্যাচের ছাত্র নিশাত ইমতিয়াজ, সালাম-বরকত হল ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক ও রসায়ন বিভাগের ৪২তম ব্যাচের ছাত্র নাফিস ইমতিয়াজ, ছাত্রলীগকর্মী নৃবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র আব্দুর রহমান ইফতি, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের রাকিব এবং নৃবিজ্ঞান বিভাগের নুরুল কবির।

সিন্ডিকেট সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “পহেলা বৈশাখে ছাত্রী লাঞ্ছনা, মারধর ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় তাদের আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে ছাত্রী নিপীড়নের কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি।”

গত ১৪ এপ্রিল বর্ষবরণ উৎসবের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌরঙ্গী এলাকায় একদল ছাত্রলীগ কর্মী তাকে যৌন নিপীড়ন করেন বলে অভিযোগ করেন এক ছাত্রী।

নির্যাতিত ওই ছাত্রী বলেন, পহেলা বৈশাখে বোটানিক্যাল গার্ডেনে বিভাগের অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যায় তিনি ও তার এক সহপাঠী হলের দিকে যাওয়ার সময় তাদের উপর হামলা হয়।

“চৌরঙ্গী মোড়ে সালাম-বরকত হলের পাঁচজন ছাত্র আমাদের থামায়। তারা আমাদের ঝোঁপের আড়ালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়।”

হামলাকারীদের একজন ওই ছাত্রীর শাড়ি ধরে টান দেয় বলে সঙ্গে থাকা তার সহপাঠী জানান। তিনি বলেন, “আমরা চিৎকার শুরু করলে তারা চলে যায়।”

এ সময় তাকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ করেন ওই ছেলে।

এ ঘটনায় ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে অভিযোগটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলে হস্তান্তর করা হয়। ওই ঘটনায় অভিযোগ দায়েরের পরে গত ১৭ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আট ছাত্রকে এবং পরে ছাত্রলীগ থেকে পাঁচজনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এদিকে যৌন নিপীড়নে জড়িতদের বিচার দাবি করে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আন্দোলনে নামে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, মশাল মিছিল, প্রশাসনিক ভবন ঘেরাওসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে রেহেল ফেরদৌস সাহা নামে আন্দোলনকারীদের একজন  বলেন, “এটা আমাদের প্রাথমিক বিজয়।  যে কোনো নিপীড়নের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করে যাব। বহিষ্কৃতরা যাতে আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসতে না পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে।”