বাগেরহাটে হাতির আক্রমণে নিহত ৩

গোপালগঞ্জ থেকে ছুটে আসা সার্কাসের একটি হাতির আক্রমণে বাগেরহাটের মোল্লাহাটে দুই নারীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন।

বাগেরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 May 2015, 03:35 AM
Updated : 23 May 2015, 03:35 AM

শনিবার ভোরে পুরুষ হাতিটি গোপালগঞ্জের গুনাপাড়া এলাকা থেকে শেকল ছিঁড়ে মধুমতি নদী পেরিয়ে মোল্লাহাট উপজেলায় ঢুকে তিন গ্রামে সাতটি বসতঘর গুঁড়িয়ে দেয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।

প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে হাতির মাহুত ও গ্রামবাসীর সহযোগিতায় হাতিটিকে শান্ত করা হয় বলে মোল্লাহাট থানার ওসি আ ন ম খায়রুল জানিয়েছেন।

হাতিটিকে মোল্লাহাট উপজেলার বাসাবাড়ি গ্রামে আবুল হোসেনের বাঁশ বাগানে রাখা হয়েছে। “হাতির মালিক হাতিটি সরিয়ে নিতে না পারলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে,” বলেছেন ওসি।

হাতির আক্রমণে গারফা গ্রামে নিহত হন বাগেরহাট সদর উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের ইয়ার আলীর স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৪৫)। তিনি সেখানে জামাইয়ের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলেন।

কাহালপুর গ্রামের যতীন্দ্রনাথ বিশ্বাসের স্ত্রী কুসুম বিশ্বাস (৬১) এবং বাসাবাড়ি গ্রামের মিজানুর রহমান ফকির (৪৫) হাতির পায়ের নিচে পড়ে মারা যান।

পুলিশ কর্মকর্তা খায়রুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মনোয়ারা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। অন্য দুজনের মৃত্যু ঘটনাস্থলেই হয়।

স্থানীয়রা জানায়, পাশের এলাকা গুনাপাড়া থেকে হাতিটি আসার পর প্রথমে উদয়পুর ইউনিয়নের গারফা গ্রামে ঢোকে। সেখানে সাতটি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়, হাতির আক্রমণে আহত হন মনোয়ারা।

এরপর উন্মত্ত হাতিটি শুঁড় তুলে ডাকতে ডাকতে কাহালপুর গ্রামে পথচারী কুসুম বিশ্বাস এবং বাসাবাড়ি গ্রামে মিজান ফকিরকে হত্যা করে বলে গ্রামবাসী জানায়।

বাসাবাটি গ্রামের মনির হোসেন মোল্লা বলেন, “সকাল ৭টার দিকে হাতিটি যখন ডাকতে ডাকতে দৌড়ে আসছিল, তখন মিজান টিউবওয়েল থেকে পানি নিচ্ছিলেন। হাতিটি পেছন থেকে মিজানকে শুঁড় দিয়ে তুলে আছাড় দেয় এবং পেটে পাড়া দিয়ে নাড়িভুড়ি বের করে দেয়।”

হাতির মাহুত মো. ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, এর মালিক সিলেটের শ্রীমঙ্গল এলাকার মতিয়ার রহমান। তার আরও একটি পোষা স্ত্রী হাতি আছে। তিনি হাতি দুটি দেশের বিভিন্ন স্থানে সার্কাস দলের কাছে ভাড়া দেন।

স্ত্রী হাতিটি বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় একটি সার্কাস দলের সাথে থাকা অবস্থায় গত সপ্তাহে প্রজননের জন্য পুরুষ হাতিটিকে সেখানে আনা হয়েছিল। গত শুক্রবার স্ত্রী হাতিটি ফকিরহাট থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং পুরুষ হাতিটি গোপালগঞ্জ জেলার গুনাপাড়া এলাকায় রাস্তার পাশে শেকল বেঁধে রাখা ছিল বলে মাহুত জানান।

তিনি বলেন, “ভোর সাড়ে ৫টার দিকে হাতিটি শেকল ছিড়ে মধুমতি নদী পার হয়ে গারফা গ্রামে ঢুকে পড়ে। খবর পেয়ে আমি এসে হাতিটিকে শান্ত করার চেষ্টা করি। এখন হাতিটি অনেকটাই স্বাভাবিক রয়েছে।”

হাতিটিকে শান্ত রেখে নিয়ে যেতে ঢাকা থেকে সঙ্গী হাতিটিকে আনা হচ্ছে বলে ফারুক জানান।