মেট্রোরেল বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা চান প্রকল্প পরিচালক

তিন চ্যালেঞ্জকে সামনে নিয়ে এগোচ্ছে মেট্রোরেল প্রকল্প। তা বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন ঢাকাবাসীর বহু প্রতীক্ষিত এই প্রকল্পের পরিচালক।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 May 2015, 05:43 PM
Updated : 21 May 2015, 05:56 PM

বৃহস্পতিবার ‘মিডিয়া পার্টনারশিপ : এ ব্রিজ টু রিচ দ্য পিপল ফর এ সাকসেসফুল মেট্রোরেল প্রজেক্ট’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রকল্প পরিচালক মো. মোফাজ্জেল হোসেন তার এই প্রত্যাশার কথা জানান।

প্রবাসী কল্যাণ ভবনে প্রকল্প কার্যালয়ে আয়োজিত এ সভায় মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট এলাকার জমি অধিগ্রহণ, সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন ও পরিবহন ব্যবস্থাপনা- এ তিন চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

“ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় সার্ভে সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। এ প্রকল্পের বিষয়ে মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্যে গণমাধ্যম সেতুবন্ধনের কাজ করবে। এ সেতুবন্ধন দিয়ে সমন্বিতভাবে আমরা প্রকল্প বাস্তবায়ন করব।”

মোফাজ্জল ঢাকা ম্যাস ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

সরকার ঢাকা মহানগরে যানজট নিরসন ও আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা দিতে মেট্রোরেল বাস্তবায়নে ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (ডিএমআরটিডিপি) নিয়েছে।

জুলাই ২০১২ থেকে জুন ২০২৪ সালের মধ্যে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)।

ঢাকার উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০.১ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোরেলের প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা ব্যয় প্রকল্পে অর্থায়ন করছে বাংলাদেশ সরকার ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপরারেশন এজেন্সি (জাইকা)। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ১৬ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা দিচ্ছে জাইকা। বাকি ৫ হাজার ৩৯০ কোটি টাকার জোগান দেবে সরকার।

জনবহুল ঢাকার গণপরিহবন ব্যবস্থাপনার তথ্য তুলে ধরে সরকারের অতিরিক্ত সচিব মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ২০১৯ সাল নাগাদ মেট্রোরেল চালু হবে। প্রস্তাবিত ২০ কিলোমিটারের মধ্যে ১০ কিলোমিটারে তা চলবে। ২০২৪ সালে পুরো প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে।

পরামর্শক দলের প্রধান হিদিও ওমরি জানান, মেট্রোরেল প্রকল্প হবে বাংলাদেশের এক ‘সাকসেসফুল স্টোরি’, যার জন্যে সবাই গর্ববোধ করবে।

ভারত ও ইন্দোনেশিয়ায় মেট্রোরেল প্রকল্প চালুর অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “সংসদে আইন পাসের স্বল্প সময়ের ব্যবধানে প্রকল্পের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। এতে আমি সন্তুষ্ট।”

মত বিনিময় সভায়  ঢাকা ম্যাস ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল আমিন প্রকল্পের বিস্তারিত অগ্রগতি তুলে ধরেন।

২০১২ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) মেট্রোরেল প্রকল্প অনুমোদন পায়। আর গত ২৬ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে পাস হয় মেট্রোরেল আইন।

প্রকল্পের ১৬টি স্টেশন থাকবে উত্তরা (উত্তর), উত্তরা (সেন্টার), উত্তরা (দক্ষিণ), পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, তালতলা, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, সোনারগাঁও, জাতীয় জাদুঘর, দোয়েল চত্বর, জাতীয় স্টেডিয়াম ও বাংলাদেশ ব্যাংক মোড়ে।

গত ফেব্রুয়ারিতে মেট্রোরেল প্রকল্পের জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক দরপত্র ডেকেছে সরকার, যাতে ইঞ্জিন ও কোচ সরবরাহ ও সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের প্রাকযোগ্যতা যাচাইয়ে প্রস্তাব চাওয়া হয়েছে।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, মেট্রোরেল প্রকল্পের যে আটটি দরপত্র ডাকা হবে তার মধ্যে প্যাকেজ-৮ এর আওতায় শুক্রবার এই দরপত্র চাওয়া হয়েছে।২০১৫ সালের মধ্যে আটটি প্যাকেজের দরপত্র ডাকার কাজ শেষ হবে।

এছাড়া ২০ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট ও ১৬টি স্টেশন নির্মাণে প্যাকেজ-৩, ৪, ৫ ও ৬ এর প্রাকযোগ্যতা যাচাইয়ের দরপত্র মে মাসে দেওয়া হবে। আর দুই নম্বর প্যাকেজের আওতায় ডিপো এলাকার ভবন ও নির্মাণকাজের দরপত্র দেওয়া হবে আগামী অক্টোবরে।