মানবপাচার ঠেকাতে তৎপরতা বাড়ানোর তাগিদ

বাংলাদেশ থেকে মানবপাচার ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিজিবি ও কোস্টগার্ডের তৎপরতা আরও বাড়াতে বলেছে সংসদীয় কমিটি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 May 2015, 05:34 PM
Updated : 21 May 2015, 05:34 PM

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়।

সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,“বাংলাদেশি কর্মীদের নিয়ম বহির্ভূতভাবে বহির্বিশ্বে প্রেরণের অপতৎপরতা বন্ধের জন্য দেশের আইনশৃংখলা বাহিনী, সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি) ও কোস্টগার্ডের তৎপরতা আরো জোরদার করার সুপারিশ করা হয়।”

মিয়ানমারে নির্যাতন ও বঞ্চনার শিকার রোহিঙ্গারা গত কয়েক বছর ধরে বাঁচার আশায় সাগর পাড়ি দিয়ে আশপাশের দেশ, বিশেষ করে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টায় আছেন। আর বাংলাদেশ থেকেও নৌকা বা মাছ ধরার ট্রলারে করে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টার ঘটনা ঘটছে নিয়মিত। মানবপাচারকারীরা এ  সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছে।

গতমাসের শেষে দক্ষিণ থাইল্যান্ডের জঙ্গলে পাচারকারীদের পরিত্যক্ত এক ক্যাম্পে অভিবাসীদের গণকবরের সন্ধান পাওয়ার পর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়।

থাই পুলিশ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করায় এবং মালয়েশীয় ও ইন্দোনেশীয় নৌবাহিনী কঠোর অবস্থান নেওয়ায় পাচারকারীদের আরও বহু নৌকা সাগরে আটকে আছে বলে শঙ্কা তৈরি হয়।

সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার তিন দেশে আটক হওয়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে সহযোগিতা দেবে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এবং মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় আটক বাংলাদেশিদের তালিকা তৈরিতে ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে।

কমিটি বৈঠকের কার্যপত্রে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়,“কতিপয় অসাধু ব্যক্তি বিভিন্নভাবে কর্মীদেরকে ছাড়পত্র ব্যতিরেকে অবৈধভাবে বিদেশে প্রেরণে অপতৎপরতা চালাচ্ছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ও সমুদ্রপথে নৌকাযোগে কর্মীদেরকে অবৈধভাবে বিদেশ প্রেরণের অপচেষ্টা করছে। এতে একদিকে যেমন কর্মীদের জীবনের ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে অপরদিকে দেশের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

“সমুদ্রপথে বিশেষ করে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় এলাকা হতে কর্মীরা নৌপথে অবৈধভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে থাইল্যান্ড হয়ে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করে। ফলে বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। বাংলাদেশি কর্মীদের নিয়ম বহির্ভূতভাবে বহির্বিশ্বে প্রেরণের অপতৎপরতা বন্ধের জন্য দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি) ও কোস্টগার্ডের তৎপরতা আরও জোরদার করা আবশ্যক।”

গণমাধ্যমে প্রচার ও সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডের কারণে অবৈধ অভিবাসন অতীতের চেয়ে কমেছে বলেও মন্ত্রণালয় দাবি করেছে।

কমিটির সভাপতি নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনের সভাপতিত্বে বৈঠকে  কমিটির সদস্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং মাহফুজুর রহমান অংশ নেন।