সীমান্ত বিল পাস সরকারের কূটনৈতিক সাফল্যে: হাসিনা

ভারতের রাজ্যসভায় সীমান্ত বিল পাস হওয়ার ঘটনাকে ‘সরকারের কূটনৈতিক সাফল্য’ অভিহিত করে এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত সবাইকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 May 2015, 06:15 AM
Updated : 7 May 2015, 11:06 AM

বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে এসে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

তিনি বলেন, “এটি এ সরকারের কূটনৈতিক সাফল্য।”

বুধবার ভারতের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় দেশটির সংবিধান সংশোধনের এই বিল পাস হওয়ার মধ্য দিয়ে দুই দেশের মধ্যকার সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের পথ প্রশস্ত হয়।

এ চুক্তির আওতায় ভারত ও বাংলাদেশের ১৬২টি ছিটমহল বিনিময় হওয়ার কথা।

রাজ্যসভায় পাস হওয়া বিলটি এখন লোকসভায় যাবে। ক্ষমতাসীন বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকসভায় বিলটি পাস হলে দুর্ভোগের অবসান ঘটবে বলে আশায় আছেন ছিটমহলের বাসিন্দারা।

বাংলাদেশি ছিটমহলগুলোতে জনসংখ্যা রয়েছে প্রায় ১৪ হাজার। আর ভারতীয় ছিটমহলগুলোর জনসংখ্যা ৩৭ হাজারের মতো।

সীমান্তচুক্তির মধ্যে দিয়ে যে ভূখণ্ড পাওয়া যাবে তার নিরাপত্তা নিশ্চিতে মতবিনিময় উপস্থিত বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আপনাদের ওপর বড় দায়িত্ব চলে আসছে।”

রাজ্যসভায় পাস হওয়া বিলের সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের সংবিধানে প্রথম সংশোধন করে কিন্তু এই বিল আনা হয়েছিল এই চুক্তির জন্য। সেসময় অনেক কথা শুনতে হয়েছে। দেশ বেচার চুক্তি, অমুক-সমুক, নানা কথা। তখন কিভাবে অপপ্রচার করা হয়েছিল অনেকে তা জানেই না। অনেকের জন্মই হয়নি। অনেকে ছোট ছিল।”

বিলটি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশের জন্য এটা প্রয়োজন ছিল।”

পঁচাত্তর পরবর্তী কোনো সরকারই অমীমাংসিত এই বিষয়টির সমাধানে উদ্যোগ নেয়নি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যখন পার্টিশন হলো সাতচল্লিশ সালে, তখন থেকে ওই সমস্যার সমাধান হয় নাই। স্বাধীনতা অর্জনের পর বঙ্গবন্ধু ইনিশিয়েটিভ নিলেন। তিনি কাজ করে গেলেন। কিন্তু, পঁচাত্তরের পর থেকে কোনো সরকার কোনো রকম উদ্যোগই নেয়নি- এটা হলো বাস্তবতা।

“ল্যান্ড বাউন্ডারি আর সুমদ্রসীমা নিয়ে কোনো সরকার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। শুধু গালি দিয়ে গেছে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য কেউ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।”

এ পর্যায়ে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ফেনীতে সাড়ে ছয় কিলোমিটার সীমান্ত চিহ্নিতকরণের বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষরের কথা স্মরণ করেন তিনি।

“২০০৯-এ ক্ষমতায় আসার পর সেটা সমাধান হয়ে গেল। আমাদের ওই জায়গাটা আমরা পেয়ে গেলাম। ওটা ফেনীতে। বিএনপি নেত্রীর কন্সটিটুয়েন্সিতে বেশ কিছু জায়গা আমরা ভারতের কাছ থেকে আদায় করে দিলাম।”

দশম জাতীয় সংসদ শুরু হওয়ার পর গতবছর ১৩ মার্চ প্রধানমন্ত্রী প্রথমবারের মতো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করেন। এটি ছিল তার দ্বিতীয় পরিদর্শন।

প্রধানমন্ত্রী নিজেই এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। আর প্রতিমন্ত্রী হিসাবে রয়েছেন আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।