দুর্যোগ মোকাবেলায় ‘ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার’ 

ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় ‘ন্যাশনাল ইমাজেন্সি অপারেশন সেন্টার’ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 May 2015, 11:57 AM
Updated : 6 May 2015, 11:57 AM

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বুধবার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এ কে এম শামীম চৌধুরী।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, উচ্চমাত্রার ভূমিকম্প সহনশীল একটি ভবনে এই সেন্টারটি করা হবে। এটি বিমানবন্দরের কাছাকাছি এবং মহাসড়কের কাছে নির্মাণের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে, যাতে প্রয়োজনে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও এই ভবনে অবস্থান নিতে পারেন।

এই সেন্টার থেকে দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগোত্তর পরিস্থিতিতে অনুসন্ধান ও উদ্ধার কাজ পরিচালনা, সমন্বয়, নির্দেশনা এবং পযর্বেক্ষণ করা হবে।

নেপালে সাম্প্রতিক ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে সারা বাংলাদেশে কম্পন অনুভব এবং কয়েকটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রেক্ষাপটে ‘ন্যাশনাল ইমাজেন্সি অপারেশন সেন্টার’ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত হল। 

রিখটার স্কেলে সাত বা তার বেশি তীব্রতার ভূমিকম্প হলে ঢাকা শহরের ৭২ হাজার ভবন ভেঙে পড়বে বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা।

এই ধরনের ভূমিকম্প হলে টেলিসংযোগ, পানি সরবরাহ, গ্যাস ও বিদ্যুৎ লাইনে বিপর্যয়সহ অগ্নিকাণ্ডের আশঙ্কা থেকে যায়। ফলে অনুসন্ধান ও উদ্ধার কাজ সমন্বয় দুরূহ হয়ে পড়ে।

শামীম চৌধুরী বলেন, “ন্যাশনাল এমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টারের মাধ্যমে ভূমিকম্পসহ যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সকল স্টেক হোল্ডারদের সমন্বয়ে অনুসন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রম অতিদ্রুত পরিচালনা করা সম্ভব হবে।”

দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে এ কেন্দ্রের মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সহায়তারও আহ্বান জানানো যাবে। জাপান, চীন, ইন্দোনেশিয়া ও যুক্তরাজ্যে এই ধরনের কেন্দ্র রয়েছে।

বৈঠকে ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এনডিএমআইএস) নামে একটি ওয়েবসাইট তৈরির সিদ্ধান্তও হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব জানান।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে জনগণের অংশগ্রহণেরও সুযোগ সৃষ্টি করার বিষয়টিও সরকারের পরিকল্পনায় রয়েছে।

বৈঠকে দুর্যোগ মোকাবেলা ও ঝুঁকি হ্রাসের বিষয়েও আলোচনা হয়; ২০১৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বরে বৈঠকের সিদ্ধান্তের বাস্তবায়নের অগ্রগতি ও দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুতিমূলক কাজের পর্যালোচনাও হয়।

বৈঠকের শুরুতেই ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত নেপালের নাগরিকদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করা হয় বলেও জানান শামীম চৌধুরী।

নেপালে বাংলাদেশ থেকে ছয়টি চিকিৎসকদের দল, ওষুধ, শুকনো খাবার, তাবুসহ বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হয়েছে। ১০ হাজার মেট্রিক টন চালও পাঠানো হচ্ছে।

নেপালের দুর্গত জনগণের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী চালের পাশাপাশি বন্ধুপ্রতীম প্রতিবেশী দেশটিতে আলু, তেল ও ডাল পাঠানোর কথাও বলেছেন।

কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বৈঠকে অংশ নেন।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞাসহ সংশ্লিষ্ট সচিব ও কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।