‘আনিসুলকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার’

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সদ্য নির্বাচিত মেয়র আনিসুল হককে ২০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2015, 03:08 PM
Updated : 5 May 2015, 03:36 PM

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে শেরে বাংলা নগরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনকে) সভায় কূটনৈতিক পাড়ার উন্নয়নের প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়।

সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, “ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আনিসুল হককে এ প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রী উপহার দিয়েছেন।

“ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকনকেও প্রকল্প উপহার দেবেন প্রধানমন্ত্রী।”

গত ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সরকারি দল আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে ঢাকা উত্তরে ব্যবসায়ী আনিসুল হক ও ঢাকা দক্ষিণে সাঈদ খোকন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন।

মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে আনিসুল হক বলেছিলেন, তিনি ‘দলীয় প্রার্থী না হলে’ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমর্থন রয়েছে তার প্রতি।

এর আগে নির্বাচন সামনে রেখে গণভবনে এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে এই দুজনকে দলের নেতাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবারের একনেক সভায় অনুমোদিত ‘গুলশান, বনানী ও বারিধারা কূটনৈতিক এলাকার রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি হবে মেয়র আনিসুলের প্রথম উন্নয়ন কাজ।

এবিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য আরাস্তু খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কূটনৈতিক পল্লী ছাড়াও দেশের প্রায় সব করপোরেটের প্রধান কার্য়ালয় গুলশান-বনানীতে অবস্থিত। বাজেটের প্রায় ৪২ শতাংশ রাজস্বের যোগান দেয় করপোরেট কোম্পানিগুলো। তাদের নির্বিঘ্ন চলাচলের সুযোগ দেওয়া দরকার বলে মনে করে সরকার।

“তাছাড়া ওই এলাকায় কূটনীতিকদের চলাফেরা বলে সরকার এই প্রকল্পকে আরো গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে।”

প্রকল্পের সার-সংক্ষেপে বলা হয়েছে, গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় বিভিন্ন দেশের দূতাবাস, আন্তর্জাতিক অফিস ও দেশি-বিদেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান থাকায় ওই এলাকার বিদ্যমান সড়ক, ফুটপাত ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার সমন্বিত ও আধুনিক পরিকল্পনার মাধ্যমে উন্নয়ন প্রয়োজন বলে সরকার প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে।

প্রস্তাবিত প্রকল্পটির ১৯৯ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ের মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১৩৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা বা ৭০ শতাংশ অর্থের যোগান দেওয়া হবে। বাকি ৫৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা বা ৩০ শতাংশ অর্থের যোগান দেবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। 

প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়, গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকার পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য ঢাকা ওয়াসা পর্যাপ্ত ড্রেনেজ নেটওয়ার্ক স্থাপন করতে পারায় জলাবদ্ধতা ওই এলাকার নিত্য সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে।

“জলাবদ্ধতার কারণে যানজট, পথচারীদের হয়রানি এবং পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এছাড়াও বিদ্যমান ড্রেনেজ ব্যবস্থার আউটলেট গুলশান-বনানী লেকে বিদ্যমান। এতে পরিবেশ ও লেকের পানি দূষিত হচ্ছে। ”

এতে আরো বলা হয়, “সম্প্রতি গুলশান শুটিং ক্লাব থেকে গুলশান ১ নম্বর হয়ে ইউনাইটেড হাসপাতাল পর্যন্ত গভীর স্ট্রম স্যুয়ারেজ লাইন স্থাপন করেছে ঢাকা ওয়াসা। এতে গুলশানের পূর্ব অংশের জলাবদ্ধতার আংশিক সমাধান হয়েছে।

“কিন্তু গুলশানের পশ্চিমাংশ, বনানী ও বারিধারার ‘কে’ ব্লকের ড্রেনেজ ব্যবস্থা আগের মতোই ত্রুটিপূর্ণ এবং ‘জে’ ব্লকের সড়ক অবকাঠামো অত্যন্ত নাজুক। এমতাবস্থায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য একনেক সভায় উপস্থাপন করা হচ্ছে।”

প্রস্তাবনা অনুযায়ী, প্রকল্পটির মাধ্যমে প্রায় ৪০ কিলোমিটার রাস্তা, প্রায় ৫৬ কিলোমিটার খোলা ড্রেন, ২৫ কিলোমিটার পাইপ ড্রেন নির্মাণ ও ৫৬ কিলোমিটার ফুটপাত উন্নয়ন করা হবে।