সোমবার ঘরের বেড়া, টিনসহ অন্যান্য মালামাল ক্রেতার কাছ থেকে ফেরত এনে ওই ভিটায় তুলে দেওয়া হয়।
‘কিস্তির টাকা দিতে না পারায় ঘর ভেঙ্গে নিলো এনজিও’ শিরোনামে শুক্রবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে সংবাদ প্রকাশিত হলে স্থানীয় প্রশাসন এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়।
বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) আশার ঋণের কিস্তির টাকা দিতে না পারায় মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার এনায়েতনগর এলাকার কাচারিকান্দি গ্রামের আলি খার স্ত্রী নাছিমা বেগমের বসত ঘরটি শুক্রবার ভেঙ্গে বিক্রি করে দেয় সংস্থাটি।
স্বামী অন্য স্ত্রী নিয়ে দূরে কোথাও বসবাস করায় নাছিমা বেগম তার মেয়েকে নিয়ে কষ্টে জীবনযাপন করেন।
এই শেষ আশ্রয় বসত ঘরটি নতুন করে ফিরে পেয়ে হাসি ফুটেছে অসহায় মা-মেয়ের মুখে।
কালকিনি থানার ওসি কৃপাসিন্ধু বালা বলেন, একটি অনলাইন নিউজ পেপারে খবরটি পড়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে অবহিত করলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে এই পরিবারটির খোঁজ খবর নেন।
ওসি বলেন, পরে তিনি নিজে নাসিমা বেগমের বিক্রি হয়ে যাওয়া ঘরটি ক্রেতার কাছ থেকে ফেরত এনে দেন।
আশার কাছে তার ১৫ হাজার টাকার যে ঋণটি রয়েছে সেটি তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরিশোধ করবেন বলে জানান।
ঘর ফেরত পেয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে নাসিমা বেগম বলেন, “ভাই আমার মাইয়াডারে নিয়া থাকার কোনো ঘর ছিল না। আপনেরা সাংবাদিক ভাইরা না আইলে আমি ঘর দুয়ার পাইতাম না। আল্লাহ আপনাকে ৫’শ বছর বাঁচায়া রাখুক। এই দোয়া করি।”
কথা কটি বলে তিনি কাঁদতে থাকেন।
“পরে বিষয়টি তিনি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বলেন। তারা আমাদের নির্দেশ দিলে আমি বাস্তব অবস্থা দেখতে এসেছি।
“ঋণগ্রহীতা নাসিমা বেগমের মেয়ে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী লিমা আক্তারের পড়াশোনার বিষয়টি আমাদের স্টাইপেন্ড (শিক্ষা বৃত্তি) প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হবে, যাতে মেয়েটি পড়াশোনা শেষ করতে পারে।”
এদিকে কালকিনি উপজেলা চেয়ারম্যান তৌফিকুজ্জামান শাহিন বলেন, এই ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক ও লজ্জাজনক।
কালকিনি উপজেলায় যেসব এনজিও ঋণ কর্মসূচির কাজ করছে তাদের সবাইকে নিয়ে মিটিং করে ঋণগ্রহীতাদের যাতে এভাবে হয়রানি না করা হয় তা নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানান তিনি।