আল কায়েদার সঙ্গে আনসারুল্লাহর যোগসূত্রের সন্দেহ

অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমকে সন্দেহ করছে বাংলাদেশের গোয়েন্দারা, আর এই দলটির সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল কায়েদার যোগাযোগ রয়েছে বলে ধারণা তাদের।

গোলাম মুজতবা ধ্রুববিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 May 2015, 03:39 PM
Updated : 4 May 2015, 06:19 AM

অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ভারত উপমহাদেশীয় আল কায়েদার (একিউআইএস) নামে বার্তা আসার পর বাংলাদেশের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য মিলেছে।

দুই বছর আগে আল কায়েদার শীর্ষনেতা আইমান আল জাওয়াহিরি বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপমহাদেশে শাখা খোলার ঘোষণা দিলেও তাদের কোনো তৎপরতার খবর পাওয়া যায়নি।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের পরপরই ‘আনসার বাংলা সেভেন’ নামে একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে দায় স্বীকার করে বার্তা দেওয়া হয়েছিল।  

তার দুই মাসের বেশি সময় পর শনিবার একিউআইএস প্রধান আসিম উমরের এক ভিডিও বার্তায় অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের দায়িত্ব স্বীকার করা হয় বলে জঙ্গি হুমকি পর্যবেক্ষণকারী ওয়েবসাইট সাইটইন্টিলিজেন্স গ্রুপ জানিয়েছে।

গোয়েন্দা পুলিশের মুখপাত্র মনিরুল ইসলাম রোববার সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাংলাদেশের কয়েকটি জঙ্গি সংগঠন আল কায়েদাকে অনুসরণ করে বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে।

“তারা ও আনসার উল্লাহ বাংলাটিমের কেউ আল কায়দার সঙ্গে যুক্ত হয়ে তাদের শিষ্যত্ব মেনে অভিজিৎ রায়কে হত্যা করেছে কি না, তা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে গোয়েন্দারা তদন্ত করে দেখছে।”

জেএমবি, হুজির তৎপরতা সীমিত হয়ে আসার মধ্যে বছর খানেক আগে আলোচনায় উঠে আসে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম। দলটির আমির মুফতি জসীমউদ্দিন রাহমানী ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যামামলায় অভিযুক্ত।

অভিজিৎ খুনের মাসখানেকের মধ্যে অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ওয়াশিকুর রহমান বাবু হত্যাকাণ্ডের পর সন্দেহভাজন যে খুনিদের ধরে পুলিশে দিয়েছিল জনতা, তারাও মুফতি জসীমউদ্দিনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছিল।

অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের কাউকে এখনও সনাক্ত কিংবা গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। উসকানিদাতা হিসেবে সন্দেহভাজন ব্লগার ফারাবী শফিউর রহমানই এখন পর্যন্ত একমাত্র গ্রেপ্তার ব্যক্তি। 

এই হত্যাকাণ্ড তদন্তে যুক্ত থাকা ডিবির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের ‘স্লিপার সেলের’ সদস্যরা এই হত্যায় জড়িত বলে আমাদের ধারণা।”

তিনি বলেন, এই জঙ্গি দলটির সদস্যদের কয়েকটি ছোট ছোট দল নিয়ে গঠিত হয় স্লিপার সেল। এক-একটি সেলে ৪/৫ জন করে সদস্য থাকে। সদস্যরা কেউই কারও সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানে না।

“কেউ পুলিশের হাতে আটক হলে যেন তাদের অন্য সহযোগীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে, এই কারণে তারা এই ধরনের সেল তৈরি করেছে,” বলেন ওই কর্মকর্তা।

যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অভিজিৎ হত্যার তদন্তে এফবিআই বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের সহযোগিতা করছে।