মৈত্রী এক্সপ্রেস যাত্রীর ‘ব্যাগ নিল বিজিবি’

অবৈধ মালামাল আনার কথা বলে ভারত থেকে আসা মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে তল্লাশির পর যাত্রীদের ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজিবি সদস্যদের বিরুদ্ধে।

পাবনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 April 2015, 01:03 PM
Updated : 28 April 2015, 01:58 PM

মঙ্গলবার দুপুরে পাবনার ঈশ্বরদী স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে বলে যাত্রীরা জানান।

এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা বিজিবির প্রতি ইট পাটকেল নিক্ষেপ করেছে।

ঈশ্বরদী জিআরপি থানার ওসি হুমায়ুন কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে তল্লাশিতে জিআরপি পুলিশের সহযোগিতা নেয়নি বিজিবির সদস্যরা। আর যেসব ব্যাগ নিয়ে গেছে সেগুলোতে কী মালামাল আছে তা আমাদের জানা নেই।

“তবে, বৈধ মালিকানার ব্যাগ ও মালামালও তারা নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন যাত্রীরা। এ বিষয়ে জিআরপি পুলিশের কিছু করার নেই।”

ঈশ্বরদীর স্টেশন মাস্টার মো. রফিজ উদ্দিন বলেন, কোলকাতা থেকে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে আসার কয়েক মিনিট আগে কুষ্টিয়ার মিরপুর ৪৭ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের নায়েব সুবেদার মো. হযরত আলী একটি লিখিত চিঠি আমাকে দেখান, সেখানে লেখা রয়েছে ভারত থেকে আসা মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে প্রচুর অবৈধ মালামাল রয়েছে। তাই ট্রেনটি তল্লাশি করা হবে।

“রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া এই চিঠি গ্রহণ করা সম্ভব নয় বলে জানালে বিজিবির সদস্যরা আমার সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন।”

মৈত্রী এক্সপ্রেসের গার্ড কণক বিশ্বাস, চালক জাহাঙ্গীর বলেন, ট্রেনটি ঈশ্বরদী স্টেশনে ২টা ৩৫ মিনিটে পানি নেওয়ার জন্য নিয়মানুসারে থামানো হয়। কিন্তু আকস্মিকভাবে বিজিবির সদস্যরা তাদের কক্ষে প্রবেশ করে বন্দুক তাক করে ধরে। জিজ্ঞাসা করা হলে চুপ থাকতে বলে। তারপর তারা দেখেন বগি থেকে ব্যাগগুলো নিয়ে যাচ্ছে।

রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা শওকত জামিল মোহসী জানান, মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে বিজিবি সদস্যদের এভাবে তল্লাশির নামে যাত্রীদের হয়রানি এবং তাদের বৈধ মালামাল নিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। তারা যদি নিয়েই থাকে তাহলে সম্ভাবত অবৈধ মালামাল ছিল তাই নিয়ে গেছে।

ব্যাগগুলো ফেরত দেওয়ার আবেদন জানিয়ে রেলওয়ের পক্ষ থেকে কুষ্টিয়ার মিরপুর ৪৭ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের সিও বরাবর অভিযোগ করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তল্লাশি শেষে ব্যাগগুলো নিয়ে যাওয়ার সময় স্টেশনে থাকা লোকজন বিজিবিকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করে। এ সময় তাদের দিকে বন্দুক তাক করে ভয় দেখায় বিজিবি সদস্যরা।

মৈত্রী এক্সপ্রেস যাত্রী আলাল বলেন, “ভারতে বেড়াতে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে স্বজনদের জন্য কাস্টম-ইমিগ্রেশনের মাধ্যমে কিছু পোশাক, কসমেটিক্স এনেছিলাম। বিজিবি সদস্যরা আমার দুটি ব্যাগ নিয়ে গেছে।”

মনীষা নামের আরেক যাত্রী বলেন, “পরিবারের কয়েকজনকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলাম। চিকিৎসা শেষে ওষুধপত্র এবং সবার জন্য কিছু পোশাক ও কসমেটিক্স এনেছিলাম। বিজিবি সদস্যরা আমাদের প্রেসক্রিপশনগুলোও নিয়ে গেছে।”

এই বিষয়ে জানতে ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়য়েনর নায়েব সুবেদার মো. হযরত আলীর দেওয়া (০১৭৬৯-৬০৪২২৭) নম্বরে বারবার যোগাযোগ করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।