ভোট জালিয়াতিতে খোদ প্রিজাইডিং অফিসার

কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের দায়িত্বে থাকা সর্বোচ্চ কর্মকর্তা হয়েও ঢাকা দক্ষিণের একটি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারকে ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থীর প্রতীকে সিল মারতে দেখেছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 April 2015, 08:10 AM
Updated : 28 April 2015, 08:10 AM

পুরান ঢাকার নারিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রিজাইডিং অফিসার ওবায়দুল ইসলামকে ব্যালট পেপারে সিল মারতে দেখেন প্রতিবেদক সাজিদুল হক ও সালাহ উদ্দীন ওয়াহিদ প্রীতম।

তারা জানান, ঢাকা দক্ষিণের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের ৬৪২ নম্বর ওই ভোটকেন্দ্রের সামনে থেকে সকালে ভোটারদের ফিরিয়ে দিতে দেখা যায় পুলিশ ও আনসার সদস্যদের।

ভোটাররা কেন্দ্রে ঢুকতে গেলে দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য তাদের বলেন, “ভেতরে সকলে নাস্তা করছে। এখন না পরে আসেন।”

এ সময় কোনো প্রতিবাদ না করেই ভোটারদের ফিরে যেতে দেখা যায়। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের দুই প্রতিবেদক সাংবাদিক পরিচয়ে ভেতরে ঢুকতে চাইলে তাদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়।

তবে ভেতরে গিয়ে তারা কাউকে নাস্তা খেতে দেখেননি। ওই ভোটকেন্দ্রের দোতলায় দুটি ভোটকক্ষের মধ্যে একটি বন্ধ ছিল। এক নম্বর বুথে যেতে চাইলে তাদের বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করেন কার্ডবিহীন দুই ব্যক্তি।

সাজিদুল হক বলেন, “তাদের ফাঁক দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখা যায়, প্রিজাইডিং অফিসার ওবায়দুল ইসলাম ও পোলিং অফিসার, ইলিশ মাছ প্রতীকের পোলিং এজেন্ট এবং দুজন কার্ডহীন ব্যক্তি মিলে ব্যালট পেপারে সিল মারছেন। তারা সবাই ইলিশের সিল দিচ্ছিলেন।”

এ সময় অন্য কোনো প্রার্থীর পোলিং এজেন্টকে সেখানে দেখা যায়নি। ইলিশ প্রতীক নিয়ে ঢাকা দক্ষিণে নির্বাচনে লড়ছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী সাঈদ খোকন।

সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে এরপর সবাই যার যার আসনে বসে পড়েন। প্রিজাইডিং অফিসার বুথ থেকে বেরিয়ে নিচে নেমে যান।

এ সময় কার্ডবিহীন ব্যক্তিদের কাছে পরিচয় জানতে চাইলে তারা বলেন, তাদের ‘কোনো পরিচয় নাই’।

প্রিজাইডিং অফিসারের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে ‘নির্বাচন কমিশন থেকে লোক আসার’ অজুহাত দেখিয়ে তিনি নিজের কক্ষে ঢুকে পড়েন। প্রায় পাঁচ মিনিট পর তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদককে নিজের কক্ষে ডেকে পাঠান।

ওবায়দুল ইসলাম বলেন, “ওই বুথে আমি একজন মেয়র প্রার্থীর এজেন্ট পেয়েছি। আর কাউকে পাই নাই।”

ওই কেন্দ্র থেকে বের হওয়ার সময়ও ভিতরে ‘নাস্তা হচ্ছে’ বলে ভোটারদের ঢুকতে পুলিশকে বাধা দিতে দেখা যায় বলে দুই প্রতিবেদক জানান।