শুরুতেই প্রধানমন্ত্রীর ভোট

সিটি করপোরেশনের নেতৃত্ব বাছাইয়ে ভোটের শুরুতেই ভোট দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 April 2015, 02:11 AM
Updated : 29 April 2015, 02:52 PM

মঙ্গলবার সকাল ৮টায় ভোট শুরুর আগেই রাজধানীর ধানমণ্ডিতে সিটি কলেজ কেন্দ্রে উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী।

ভোট শুরুর পর প্রথমেই ভোট দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী ২৬৫ নম্বর ভোট কেন্দ্রে পৌঁছানোর পর ঢাকা দক্ষিণের রিটার্নিং কর্মকর্তা মিহির সারওয়ার মোর্শেদ তাকে স্বাগত জানান।

ওই কেন্দ্রের ২ নম্বর বুথে (মহিলা) ভোট দেন শেখ হাসিনা।

ভোট দিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ভোট আমার সাংবিধানিক অধিকার, নাগরিক অধিকার। আজকে আমি ভোট দিতে পারলাম।

“এই কারণে আমার ভালো লেগেছে। কারণ আমার ভোট আমি দিতে পারলাম। আমার নাগরিক অধিকার আমি প্রয়োগ করতে পারলাম। আমার যে জনপ্রতিনিধি হবে, আমি তাকে ভোট দিচ্ছি।”

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে আসা বিএনপির নেতারা সিটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকায় এই ভোট নিয়ে মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণ, উত্তর ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে ভোট হচ্ছে মঙ্গলবার। এই তিন সিটিতেই বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সমর্থিতদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস রয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণে আওয়ামী লীগের সমর্থনে ইলিশ মাছ প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে ভোটের লড়াইয়ে আছেন সাঈদ খোকন।  

মেয়র পদে ‘ইলিশ মাছ’ প্রতীকে ভোট দিয়েছেন জানিয়ে দল সমর্থিত প্রার্থীদের জয়ের আশা প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

“আমি আশা করি, এই নির্বাচনে আমাদের সমর্থিত প্রার্থী জয়ী হবে। আমি যাকে ভোট দিয়েছি..।”

ভোট দেওয়ার পর কেন্দ্রের বাইরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দল সমর্থিত প্রার্থীদের প্রতীক ঘুড়ি, পানপাতা ও ইলিশ মাছে ভোট দিয়েছেন তিনি।

শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ও সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হবে বলে আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা মোকাবেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যা ব্যবস্থা নেওয়ার তাই নেবে। জনগণের জানমাল রক্ষায় যা যা করণীয় আমরা তাই করব।”

নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক না কেন, আওয়ামী লীগ মেনে নেবে জানিয়ে তিনি বলেন, “নির্বাচনের ফলাফল অবশ্যই মেনে নেব। জনগণ যে রায় দেবে সেটাই মেনে নেব। আমরা মেনে নেইনি? আমরা তো অনেকগুলো সিটি কর্পোরেশন পাইনি। আমরা মেনে নেইনি?”

শান্তিপূর্ণভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

‘সুষ্ঠু’ ভোট না হলে বিএনপি আন্দোলনের যে ঘোষণা দিয়েছে, সে প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তারা জনগণের মতামতকে কোনো গুরুত্ব দেবে না?  জনগণের মতামত মেনে নেবে না? তাদের উচিত, জনগণ যাকে ভোট দেবে, যাকে নির্বাচিত করবে ভোটের ফলাফল মেনে নেওয়া।

“জিতলে ভালো, না জিতলে আন্দোলন। আর তাদের আন্দোলন মানে তো মানুষ খুন করা।” 

বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের প্রতি ‘সহিংসতা থেকে গণতন্ত্রের পথে আসার’ আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তাদের রাজনীতি যেন জনগণের কল্যাণে হয়- ব্যক্তি স্বার্থে না, দলের স্বার্থে না। তারা যেন জনগণের কল্যাণে আসে। হত্যা- খুনের রাজনীতি যেন পরিহার করে।”

পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে সাধারণ নাগরিকদের ভোটের অধিকার না থাকার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “এই দেশে যে ভোটের চিত্র দেখেছি। ১৯৮১ সালে, হ্যাঁ-না ভোট; ’৭৯ সালের নির্বাচন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। এরপর অনেক নির্বাচন- সেখানে তো মানুষের ভোট দেওয়ার কোনো অধিকার ছিল না।”

বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা অর্থের বিনিময়ে ভোট কেনার চেষ্টা করছেন বলে খবর পেয়েছেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাবেক মন্ত্রী আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক এবং স্থানীয় সাংসদ ফজলে নূর তাপস উপস্থিত ছিলেন।