ভোট সুষ্ঠু না হলে ফের আন্দোলন: বিএনপি

লাগাতার অবরোধ-হরতাল শিথিল করে সিটি নির্বাচনে আসা বিএনপি ভোট সুষ্ঠু না হলে ফের আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে। 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 April 2015, 02:03 PM
Updated : 27 April 2015, 04:55 PM

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ভোটগ্রহণের আগের দিন সোমবার নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই হুমকি দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ।

তিনি বলেন, “যদি ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে বাধা দেওয়া হয়, এজেন্টদের যেতে দেওয়া না হয়, তাহলে আমরা স্পষ্টভাষায় বলে দিতে চাই, ভোটের অধিকারের যে আন্দোলন চলছে, তা আরও জোরদার করা হবে।”

নির্দলীয় সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে বিরতি দিয়ে স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বিএনপি। তবে নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি বলে তাদের অভিযোগ।

ইসির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে এলেও সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে তার দায় ‘সরকারের ওপরই বর্তাবে’, বলেন মওদুদ।

“আমরা বলতে চাই, সিটি নির্বাচনে ওই রকম নীল নকশা বাস্তবায়ন করা হলে এই সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে আমাদের অংশ নেওয়া সম্ভবপর হবে না।”

‘প্রতিকূলতার’ মধ্যেও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সেরেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা মনে করি, পরিবর্তনের পক্ষে জনগণের জোয়ার উঠেছে। যদি কাল অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয় অবশ্যই আমাদের সমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে বিজয় আসবে।”

সেনাবাহিনীকে নির্বাচনের মাঠে দায়িত্ব পালনে না আনার সমালোচনা করে মওদুদ বলেন, “সরকার পুলিশ ও র‌্যাবকে দিয়ে নির্বাচনের ফল নিজেদের পক্ষে নিতে নীল-নকশা প্রণয়ন করেছে বলে আমরা শুনতে পেরেছি, তা কাল (মঙ্গলবার) আমরা যাচাই করতে পারব।”

ইসির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “সবার সমান সুযোগ থাকা তো দূরের কথা, বিরোধী দলের প্রার্থীদের অনেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হয়রানি ও নিপীড়নের কারণে প্রচারণায় অংশই নিতে পারেননি। বিরোধী প্রার্থীদের পোস্টার লাগাতে দেয়নি।

“আমাদের নেত্রী ঢাকায় প্রচারণায় নামলে তার গাড়িবহরের ওপর চার দফা হামলাসহ তার প্রাণনাশের অপচেষ্টা চলানো হয়েছে। এরকম এক অনিশ্চয়তার মধ্যে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।”

এজেন্টদের ভয়ভীতি প্রর্দশনের অভিযোগ নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠানো হলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহ বলেন, ভোট পর্যবেক্ষণে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সকাল ৮টা থেকে ‘মনিটরিং সেল’ কাজ শুরু করবে।

এছাড়া ঢাকা দক্ষিণে মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাসের বাড়িতে একটি এবং ও উত্তরে মহাখালীর অ্যাংকর টাওয়ারে আরেকটি মনিটরিং সেল কাজ করবে। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন কার্যালয় থেকেও ভোটের ওপর নজর রাখা হবে।

ডিএমপিতে গিয়ে বিফল

ভোটের আগের দিন বিএনপির ছয় আইনজীবী নেতা ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার কার্যালয়ে গিয়ে তাকে না পেয়ে ফিরে এসেছেন।

সোমবার বিকালে ডিএমপি কমিশনার কার্যালয়ে যান মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সানাউল্লাহ মিয়া, খোরশেদ মিয়া আলম, মো. ইকবাল হোসেন, ওমর ফারুক ফারুকী ও মোহাম্মদ মোসলেহউদ্দিন জসীম।

ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মাসুদ তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, “কমিশনারের সঙ্গে দেখা করতে গতকাল (রোববার) যোগাযোগ করেছিলাম। কিন্তু এখানে এসে জানতে পারি তিনি অফিসে নেই।”

প্রধান ফটকে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।

মাসুদ তালুকদার বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পুলিশ যাতে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে, সেই আহ্বান জানাতে তারা এসেছিলেন।

তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনে অনেক প্রার্থী প্রকাশ্যে নির্বাচন করতে পারছেন না। পুলিশ তাদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে, হয়রানি করছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, লিয়াকত আলী মোল্লা নামের এক কাউন্সিলর পদপ্রার্থী কাশিমপুর কারাগার থেকে বের হলে কারাফটক থেকে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়।

আইনজীবী নেতাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগের বিষয়ে সেখানে দায়িত্বরত এএসআই আল মামুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “উনারা (আইনজীবী) সম্মানিত লোক। খারাপ ব্যবহারের প্রশ্নই ওঠে না।”