ভূমিকম্পে ফাটল; খালি করা হল ইডেনের ছাত্রাবাস

ভূমিকম্পে রাজধানীর ইডেন কলেজে দুই বছর আগে নির্মিত একটি ছাত্রাবাসে ফাটল দেখা দেওয়ায় সেখান থেকে সব ছাত্রীকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 April 2015, 12:22 PM
Updated : 27 April 2015, 02:17 PM

সোমবার দুপুরে কলেজ কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পাওয়ার পর থেকে ইডেনের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ছাত্রীরা হল ছাড়তে শুরু করেন। বিকাল ৪টার মধ্যে ছাত্রবাসটি খালি করা হয়।

ইডেনের ১১তলাবিশিষ্ট এই ছাত্রাবাসে ১ হাজার ২০০ ছাত্রী থাকেন। ২০১৩ সালে এই ছাত্রাবাসের নির্মাণকাজ শেষ হয়।

পর পর দুই দিনের ভূকম্পনে ছাত্রাবাসটির ২৯টি কক্ষে ফাটল দেখা দিয়েছে বলে ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ হোসনে আরা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “ভূমিকম্পের পর ২৯টি কক্ষে ফাটল দেখা দেওয়ায় নিরাপত্তার কারণে সাত দিনের জন্য ছাত্রীদের হল ছাড়তে বলা হয়েছে।”

অধ্যক্ষ হোসনে আরা

কী কারণে ওই সব কক্ষে ফাটল দেখা দিয়েছে, তা এখনও নিশ্চিত হতে পারেননি অধ্যক্ষ। প্রধান প্রকৌশলী ছাত্রাবাসটি পরীক্ষা শেষ করলে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে বলে জানান তিনি।

এই ছাত্রাবাসের যেসব শিক্ষার্থীর পরীক্ষা রয়েছে, তাদের অন্য হলে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান অধ্যক্ষ।

শনিবার দুপুরে নেপালে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে ভারত ও বাংলাদেশের বিশাল এলাকা কেঁপে ওঠে। এতে বাংলাদেশে ১৭টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়।

রোববারও ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে বাংলাদেশ। তবে এতে কোনো ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

সোমবার বেলা ২টার দিকে ইডেন কলেজে গিয়ে দেখা যায়, ব্যাগপত্র নিয়ে ছোট ছোট দলে হল ছাড়ছেন ছাত্রীরা।

বাংলার ছাত্রী ইশতেহা কবীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হলে ফাটল দেখা দেওয়ার সাত দিনের জন্য হলের বাইরে থাকার নোটিস দেওয়া হয়েছে। আমি গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া চলে যাচ্ছি।”

বোনকে নিতে আসা শরিফুল ইসলাম নামে একজন বলেন, “আমি মেসে থেকে পড়াশোনা করি, ঢাকায় কোনো আত্মীয় না থাকায় বোনকে নিয়ে আজই গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায় চলে যাব।”

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ছাত্রী বলেন, “আগে থেকেই হলে ফাটল ছিল, ভূমিকম্পের পর নতুন করে ফাটল দেখা দিয়েছে।”

এক বছর আগে ইডেন অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেওয়া হোসনে আরা বলেন, “আগে থেকেই ওই হলে কোনো নির্মাণত্রুটি ছিল কি না, আমি তা বলতে পারব না।”

সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালে এই হলটির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল।  

“আমার আগে আরও দুজন অধ্যক্ষ দায়িত্ব পালন করেছেন। হল নির্মাণে ত্রুটি আছে কি না, তারাই তা ভালো বলতে পারবেন।”

হলের ঠিক পাশেই একটি পুকুর রয়েছে জানিয়ে অধ্যক্ষ বলেন, এজন্য ভবনটির কোনো ক্ষতি হয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।