ম্যাজিস্ট্রেটের শিক্ষক লাঞ্ছনা: সমিতির কর্মবিরতি 

পিরোজপুরে এইচএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের হাতে এক কেন্দ্র পর্যবেক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় বাগেরহাট, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন জেলায় পূর্ণদিবস কর্মবিরতি ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 April 2015, 03:44 PM
Updated : 26 April 2015, 03:44 PM

ঘটনার পর গত ১৭ এপ্রিল ঢাকায় বিসিএস সাধারণ শিক্ষক সমিতি ঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রোববার দিনভর এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

মানববন্ধনে শিক্ষকরা এ ঘটনায় জড়িতদের অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, রোববার সকাল ১১টার দিকে বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজ শাখা ওই কর্মবিরতি ও মানববন্ধন পালন করে। পরে শিক্ষকদের ওই কর্মসূচির সঙ্গে শিক্ষার্থীরা একাত্মতা প্রকাশ করে।

মানববন্ধনে শিক্ষকরা বলেন, অধ্যাপক মোনতাজ উদ্দিন আহমেদকে যারা লাঞ্ছিত করেছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিলে শিক্ষক সমাজ আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবেন।

এতে বক্তব্য দেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষক সমিতির (কেন্দ্রীয়) সভাপতি অধ্যাপক নাসরিন বেগম, মহাসচিব অধ্যাপক আইকে সেলিমুল্লাহ খন্দকার, নির্বাহী সদস্য সহযোগী অধ্যাপক মো. শাহআলম ফরাজী, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক সাইফুদ্দিন ও সরকারি পিসি কলেজের উপাধ্যাক্ষ মোস্তাহিদুল আলম রবি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া

দুপুর ১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের মূল ভবনের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. হানিফ, উপাধ্যক্ষ মো. আবদুর রাজ্জাক মীর, অধ্যাপক আকবর হোসেন, সহযোগি অধ্যাপক এজেএম আরিফ হোসেন, ফারজানা ক্যামেলিয়া, ফারহানা সহিদ দিতি, প্রভাষক মনির হোসেন প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, একটা স্বাধীন দেশে শিক্ষকদের পদদলিত করা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। অবিলম্বে জড়িতদের অপসারণ করা হোক।

এ সময় বক্তারা আগামী ১ মে সারাদেশের বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের ১৬ হাজার শিক্ষকদের নিয়ে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেন।

গোপালগঞ্জ

বিসিএস সাধারন শিক্ষা সমিতির উদ্যোগে জেলার শিক্ষকরা রোববার ১১টায় স্থানীয় প্রেস ক্লাবের সামনে একঘন্টা ব্যাপী এ মানববন্ধন পালন করে।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন গোপালগঞ্জ সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারন সম্পাদক জিতেন্দ্রনাথ বালা, উপধ্যক্ষ মো. সেলিম, বিসিএস শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য সিদ্দিকুর, জিএম গোলাম মোস্তফা, মো. খালিদ প্রমুখ।

কুষ্টিয়া

সকাল সাড়ে ১০টায় দিকে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ ইউনিট ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করে।

এ সময় ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়।

এদিকে সরকারি মহিলা কলেজ ও আমলা সরকারি কলেজের একই কমসূচি পালিত হয়েছে বলে জানান তিনি।

মাগুরা

সকাল ১১টায় শহরের এমআর রোড়ে মাগুরা সরকারি কলেজের সামনে মানববন্ধন করে সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।

এছাড়া নীলফামারী, গাইবান্ধা ও মুন্সিগঞ্জের কয়েকটি কলেজেও পূর্ণদিবস কর্মবিরতি ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

গত ৯ এপ্রিল এইচএসসির ইংরেজি প্রথম পত্রের পরীক্ষায় পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া সরকারি কলেজ কেন্দ্রে প্রধান পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন করছিলেন সহকারী অধ্যাপক মোনতাজ উদ্দিন।

গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, পরীক্ষা চলাকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশ্রাফুল ইসলাম উচ্চৈস্বরে মোবাইলে কথা বলতে বলতে একটি পরীক্ষা কক্ষে প্রবেশ করেন।

এ সময় মোনতাজ উদ্দিন তার পরিচয় জানতে চাইলে আশ্রাফুল ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে লাঞ্ছিত করেন।

পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনির হোসেন হাওলাদারের উপস্থিতিতে নিজের পা ধরে ওই শিক্ষককে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন আশ্রাফুল।

ম্যাজিস্ট্রেটের পা ধরে ওই শিক্ষকের ক্ষমা চাওয়ার ছবি ফেইসবুকসহ স্যোসাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।

এই ঘটনা তদন্তে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এবং বরিশাল শিক্ষা বোর্ড মঙ্গলবার পৃথক কমিটি গঠন করেছে।