সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন খালেদা

সিটি নির্বাচনের প্রচারে নামার পর হামলার সম্মুখীন হওয়ার পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের চিঠি পাওয়ার মধ্যে সংবাদ সম্মেলনে আসছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2015, 12:18 PM
Updated : 25 April 2015, 12:18 PM

রোববার বেলা ২টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হবে। এর এক ঘণ্টা পর গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনের ঘোষণা এর আগেই এসেছে।

ইন্দোনেশিয়া সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন ডাকা হলেও সিটি নির্বাচনের আগে এই সংবাদ সম্মেলন স্বাভাবিকভাবেই চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি আলোচনায় আসবে।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচার শেষের দিন সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলবেন বলে তার প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান জানিয়েছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দেশের চলমান পরিস্থিতির গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দিক, বিশেষ করে ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিনটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী বিষয়াদি নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন দেশবাসীর উদ্দেশে বক্তব্য দেবেন।”

আন্দোলনের কর্মসূচিকে সামনে রেখে গত ৩ জানুয়ারি থেকে একটানা ৯২ দিন গুলশান কার্যালয়ে অবস্থানের পর এই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হচ্ছেন খালেদা জিয়া। কার্যালয়ে অবস্থানকালে গত ১৩ মার্চ সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন তিনি।

৫ জানুয়ারি কার্যালয় থেকে বাসায় ফেরার পর গত সপ্তাহজুড়ে ঢাকায় ভোটের প্রচারে নেমেছিলেন খালেদা জিয়া। এর মধ্যে তিন দিন হামলার মুখেও পড়েছিলেন তিনি।

পাশাপাশি তার প্রচারে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগও ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে সতর্ক করে শনিবারই চিঠি পাঠিয়েছেন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা।

রিটার্নিং কর্মকর্তার চিঠি দেওয়ার পর খালেদা জিয়া শনিবার আর নির্বাচনী প্রচারে নামেননি। তার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেছেন, “ম্যাডামের আজ কোনো কর্মসূচি নেই। তিনি বাসায় আছেন।”

এদিকে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগকে ‘কল্পনাপ্রসূত’ অভিহিত করে নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপের প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি।

শনিবার বিকালে নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, “নির্বাচন কমিশন বলেছে, খালেদা জিয়া না কি নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করেছেন।এই অভিযোগ কল্পনাপ্রসূত। আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, তিনি একেবারে কোনো নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করেননি।

“আমরা মনে করি, নির্বাচন কমিশন বেগম জিয়ার জিয়ার বিরুদ্ধে ওই কল্পনাপ্রসূত অভিযোগ এনে সরকারের জনসংযোগ বিভাগের দায়িত্ব পালন করছে। আমরা কমিশনেরে এহেন কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাই।”

ভোটের প্রচারে খালেদা জিয়া (ফাইল ছবি)

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এখন সরকারের লাভজনক কোনো পদে না থাকায় আইন অনুযায়ী তার ভোটের প্রচারে থাকতে কোনো বাধা নেই।

কিন্তু তিনি যেভাবে ‘গাড়িবহর নিয়ে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটিয়ে’ বিএনপিসমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে গত এক সপ্তাহ ধরে প্রচার চালাচ্ছেন, তা নিয়েই কমিশনের আপত্তি। 

খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের বিষয়ে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, “তিনি যেখানে যাবেন, সেখানে তার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লোকজন সঙ্গে থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। সরকার যদি বেগম জিয়ার যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা দিত, হলে এটা হত না।”

নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “শাসক দলের প্রার্থীরা প্রতিদিন নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে যাচ্ছেন। বিরোধী দলের প্রার্থীদের প্রচারণায় বাধা দেওয়া হচ্ছে।

“নির্বাচন কমিশনের যেখানে ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার, সেখানে তারা চোখ বুঁজে আছে। তারা কাজ করছে সরকারের ইচ্ছায়, তাদের অঙ্গুলি হেলনিতে।”

কামরাঙ্গীর চরসহ বিভিন্ন স্থানে বিরোধী দলসমর্থিত প্রার্থীদের নির্বাচনী ক্যাম্প ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ তুলে আসাদুজ্জামান বলেন, এ নিয়ে অভিযোগ করা হলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।

নির্বাচন কমিশনকে শক্ত অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন নিচু হয়ে কুঁজো হয়ে গেছে। নির্বাচন কমিশনকে বলব, আপনারা দয়া করে মাথা উঁচু করে প্রকৃতি থেকে অক্সিজেন নিন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার যদি সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারেন, তাহলে আপনি চাকরি ছেড়ে দিন।”