ইসির উপ সচিব শামসুল আলম শুক্রবার রাত সোয়া ১০টায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তাকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে।”
এছাড়া পুলিশ মহাপরিদর্শক, ঢাকার পুলিশ কমিশনার ও জেলা প্রশাসককেও শনিবার বাহকের মাধ্যমে ওই চিঠির অনুলিপি পাঠানো হবে বলে কমিশনের কর্মকর্তারা জানান।
কমিশনের একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনকেও চিঠি দিতে বলা হয়েছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এখন সরকারের লাভজনক কোনো পদে না থাকায় আইন অনুযায়ী তার ভোটের প্রচারে থাকতে কোনো বাধা নেই। কিন্তু তিনি যেভাবে ‘গাড়িবহর নিয়ে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটিয়ে’ বিএনপিসমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে গত এক সপ্তাহ ধরে প্রচার চালাচ্ছেন তা নিয়েই কমিশনের আপত্তি।
২৮ এপ্রিল ভোটের আগে প্রচারের সুযোগ আছে আর মাত্র তিন দিন। ইতোমধ্যে বিধি লঙ্ঘন না করার বিষয়ে অনুরোধ করার পর প্রচার থেকে সরে গেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এইচ এম এরশাদ।
গত শনিবার থেকে ঢাকায় গাড়িবহর নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে থাকা বিএনপি নেত্রী খালেদা মাঝখানে একদিন বিরতি দিয়ে শুক্রবারও প্রচার চালিয়েছেন।
এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের নালিশ দেন সহস্র নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব গোলাম কুদ্দুস।
বিধি লঙ্ঘনের ওই অভিযোগ আমলে নিয়েই খালেদার বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের এই নির্দেশনা দিল ইসি।
“ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গাড়ি বহর নিয়ে দলসমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় নিয়োজিত থাকায় জন চলাচলের বিঘ্ন হচ্ছে। পাশাপাশি তার গাড়ি বহরে কিছু ব্যক্তি অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে।
“প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে যেসব সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে তা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বিষয়টি সিটি করপোরেশন নির্বাচন আচরণবিধিমালা ২০১০ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।”
আচরণবিধির ৬ ধারার প্রচার সংক্রান্ত বাধা নিষেধ, সভা সমিতি অনুষ্ঠানে বিধি নিষেধ, মিছিল বা ‘শোডাউনে’ বাধা নিষেধ, উসকানিমূলক বক্তব্য ও অনভিপ্রেত গোলযোগ সৃষ্টিতে বাধা নিষেধের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে এ চিঠিতে।
“এসব কাজ বিধিমালাপরিপন্থী এবং বিধি ৯ মোতাবেক তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”
বিধিগুলো খালেদা জিয়ার নজরে এনে এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিতে বলেছে নির্বাচন কমিশন।
ইসির এ নির্দেশনা অনুযায়ী জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিয়ে কমিশন সচিবালয়কে তা অবহিত করতে বলা হয়েছে দুই রিটার্নিং কর্মকর্তাকে।
আচরণবিধির ৯ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো ব্যক্তি বিধি লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার জরিমানা, সর্বোচ্চ ৬ মাসের দণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে।
খালেদা যে ছয়দিন ভোটের প্রচারে বেরিয়েছেন, তার মধ্যে চারদিনই তার গাড়িবহরে বাধা দেওয়া বা হামলার ঘটনা ঘটেছে, যা নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে ইসিতে অভিযোগ জানানো হয়েছে।