এদের একজন হলেন সাদুল্লাপুর উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ভাঙ্গামোড় গ্রামের আব্দুল বারীর মেয়ে বীথি খাতুন (২১)।
সংসারে অভাব-অনটন ঘোচাতে রানা প্লাজা ধসের এক বছর আগে বীথি চাকরি করতে যান সাভারে। কাজ নেন রানাপ্লাজার তৃতীয় তলায় একটি কারখানায়। এরপর এক বছর দরিদ্র বাবা-মার সংসার ভালোই চলছিল মেয়ের পাঠানো টাকায়।
কিন্তু রানা প্লাজা ট্রাজেডি তাদের সব স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে। বীথির খোঁজ এখনও পাননি তার বাবা-মা।
শুক্রবার আবেগজড়িত কণ্ঠে বীথির মা অঞ্জুয়ারা বেগম বলেন, “ঘটনার [রানা প্লাজা ট্রাজেডি] এক সপ্তাহ আগোত মাইয়া মোক ফোন করি কয়, মা তোমরা আর চিন্তা করেন না, এ্যাবার বাড়িত য্যায়া নয়া ঘর দিমু।
“কিন্তু মাইয়া মোর বাচি আছে, না মরি গেছে, এতোদিনেও তাও জানবার পানু না।”
মেয়ের ছবি হাতে নিয়ে এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন, “নয়া ঘর নাগব্যার নয় মা, খালি তুই মোর বুকুত ফিরি আয়।”
বীথির বাবা দিনমজুর আবদুল বারী জানান, দুই মেয়ে আর এক ছেলে নিয়ে তাদের সংসার। বীথি সবার বড়। ছোট মেয়ে ফাইমা ও ছেলে আশিকুর। আশিকুর বাড়ির পাশে একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে।
সংসারে সব সময় অভাব অনটন লেগে থাকে। সংসারের অভাব ঘোচাতে মেয়েকে গার্মেন্টসে পাঠান কাজ করতে। কিন্তু সেই যে গেল আর ফিরল না।
এখন মেয়ে বেঁচে আছে, না মরে গেছে, তাও জানেন না তিনি।
জীবিত না হোক অন্তত মেয়ের কবরের সন্ধান হলেও চান এই দিনমজুর।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের নয় তলা রানা প্লাজা ধসে পড়লে এর নিচে চাপা পড়ে ওই ভবনে থাকা পাঁচটি কারখানার বহু শ্রমিক।
১১১৫টি লাশ উদ্ধারের পর ওই বছরের ১৩ মে উদ্ধার অভিযান শেষ করে সেনাবাহিনী। জীবিত অবস্থায় ২৪৩৮ জনকে উদ্ধার করা হয়, যার মধ্যে ১২ জন হাসপাতালে মারা যান।