শ্রীপুর থানার ওসি আব্দুল মোতালেব মিয়া জানান, প্রহ্লাদপুর ইউনিয়নের আতলরা ফাউকাল এলাকায় বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এ হত্যাকাণ্ড হয়।
নিহতরা হলেন- হাছিনা ওরফে হাছুনী বিবি (৫০) ও তার মেয়ে আরিফা খাতুন (১৮)। আরিফা ধলাদিয়া কলেজের বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্রী।
আরিফার বড় ভাই আহত শাহজাহান মিয়াকে (২৫) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থলে যাওয়া প্রহ্লাদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু সাইদ জানান, আতলরা ফাউকাল গ্রামের মৃত আমির উদ্দিনের স্ত্রী হাছিনা ওই বাসায় দুই ছেলে মুজিবুর রহমান (২১) ও শাহজাহান এবং মেয়ে আরিফাকে নিয়ে থাকতেন।
রাতে হাছিনা, আরিফা ও শাহজাহান একই ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। আর মুজিবর ছিলেন অন্য ঘরে।
রাত ২টার দিকে হাছিনাদের ঘর থেকে চিৎকার-চেঁচামেচিতে মুজিবরসহ প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন। তারা আসার আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
পরে তিন জনকে শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক আরিফাকে মৃত ঘোষণা করেন এবং মা-ছেলেকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। ঢাকা নেওয়ার পথেই হাছিনার মৃত্যু হয়।
“উদ্ধারের সময় আরিফাকে বিবস্ত্র অবস্থায় পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, দুর্বৃত্তরা আরিফাকে ধর্ষণ করেছে বা ধর্ষণ চেষ্টার সময় তার ভাই ও মা রক্ষা করতে গেলে তাদের সবাইকে কুপিয়ে পালিয়েছে,” বলেন চেয়ারম্যান।
মুজিবরের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, গভীর রাতের কোনো এক সময় দুর্বৃত্তরা মাটির ঘরের দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে এই হামলা চালায়।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, শাহজাহান রাজমিস্ত্রীর সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মাথায় গুরুতর জখম হয়েছে তার।
মুজিবর নেসলে কোম্পানির কারখানার শ্রমিক এবং তাদের একমাত্র বোন আরিফা লেখাপড়ার পাশাপাশি গৃহশিক্ষকতা করতেন।
এ ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করতে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে ওসি মোতালেব জানিয়েছেন।
এদিকে নিহতদের দাফন ও আহত যুবকের চিকিৎসার জন্য গাজীপুর জেলা প্রশাসন থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাদেকুর রহমান।
তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক মো. নূরুল ইসলাম ভিক্টিমদের পরিবারকে দাফন ও চিকিৎসার জন্য ৩০ হাজার টাকা প্রদান করেছেন। চিকিৎসার প্রয়োজনে আরো আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।