সোমবার মানিকগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলার শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সরকার প্রধান বলেছেন, “কোনো ধরনের নাশকতা ও জঙ্গিবাদী কাজ যাতে না হয়, সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। প্রতিটি মুহূর্তে যৌথ অভিযান চলবে, যেন ভবিষ্যতে কেউ নাশকতা করতে না পারে, প্রস্তুতি নিতে না পারে।”
বিএনপি জোটের তিন মাসের অবরোধ-হরতালে পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হয়ে নিহত ও আহতদের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একজন সুস্থ মানুষ আগুন দিয়ে আরেকজন মানুষকে পুড়িয়ে মারতে পারে- এর থেকে জঘন্য কাজ কিছু হতে পারে না।”
মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ কক্ষ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
মানিকগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলার সার্বিক উন্নয়নের খবর নেওয়ার পাশাপাশি ঢাকা ও সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার এবং হবিগঞ্জ ও মাদারীপুরের জেলা প্রশাসকের বক্তব্য শোনেন প্রধানমন্ত্রী।
মুক্তিযুদ্ধের সময়ে যেখানে গণহত্যা হয়েছে সেসব স্থানে গণকবর খুঁজে বের করতে স্থানীয় প্রশাসনকে তাগিদ দেন তিনি।
“সাড়ে সাত কোটি মানুষের মধ্যে তিন কোটি গৃহহীন ছিল। ৩০ লাখ জীবন দিয়েছে। এই ত্যাগের ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে।”
ভিডিও কনফারেন্সের শুরুতেই মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক তার জেলার সার্বিক পরিস্থিতি এবং পুলিশ সুপার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন।
এছাড়া মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, পৌরসভা চেয়ারম্যান এবং শিবালয় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানও কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি জেলায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড জোরদারের উপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, “সকলকে রাজধানীতে আসতে হবে- তা নয়। আমরা সব জেলাকে স্বয়ংসম্পূর্ণ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।”
মানিকগঞ্জে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় না থাকার কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, “এটা তো ভালো না। কেউ তো এখানে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় করতে পারে।”
শেখ হাসিনা বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাই তার সরকারের লক্ষ্য। বাংলাদেশের মানুষ ‘সুন্দরভাবে বাঁচবে’, এটাই সরকার চায়।
প্রধানমন্ত্রী মানিকগঞ্জের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর কথা বলেন এবং উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সুষ্ঠুভাবে দ্রুত শেষ করার তাগিদ দেন।
আরিচায় একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প করার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।
মানিকগঞ্জের কর্মকর্তাদের তিনি বলেন, “আগামী ২০ বছরের কথা মাথায় রেখেই কাজ করতে হবে।”
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী অনাবাদী জমি উৎপাদনমুখী করার তাগিদ দেন।