বিচারক আসার আগে ‘আদালত কক্ষে’ গ্রেপ্তার

আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করতে যাওয়া এক আসামিকে এজলাশ থেকে গ্রেপ্তারের অভিযোগ উঠেছে।

শেরপুর প্রতিনিধিআব্দুর রহিম বাদল, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2015, 03:32 PM
Updated : 19 April 2015, 03:32 PM

রোববার শেরপুর মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে এ ঘটনা ঘটেছে বলে আসামিপক্ষ দাবি করেছে।

তবে পুলিশ বলছে, আদালতের বাইরে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম আধার জানান, শেরপুর শহরের এক কলেজছাত্রীকে অপহরণ ও সহায়তার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় রোববার সকালে মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করতে আসেন মূল আসামি স্থানীয় নবীনগরের কলেজছাত্র জিহানের বাবা হানিফ (৪৫) ও মা বিনা (৪৩)।

আদালতের বিচারক এজলাসে ওঠার আগে সকাল সাড়ে ১০টায় সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ আদালত কক্ষ থেকে আইনজীবী, আইনজীবী সহকারী ও আদালতের কর্মচারীদের সামনেই হানিফকে টেনেহিঁচড়ে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।

অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম আরও জানান, পরে হাজিরা দেন হানিফের স্ত্রী বিনা।

ওই সময় আদালতে হাজির আইনজীবী সমিতির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র হোড়, সাধারণ সম্পাদক আবুল মানসুর স্বপন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোখলেসুর রহমান আকন্দ ও রফিকুল ইসলাম আধারসহ প্রায় সব আইনজীবী সমস্বরে আদালত কক্ষ থেকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ করলেও কোনো লাভ হয়নি।

ওই অবস্থায় আইনজীবীরা মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ ওই আসামিকে আদালতে তলবের আদেশ প্রার্থনা করলে মুখ্য বিচারিক হাকিম শরীফুল ইসলাম তা নাকচ করে আসামি বিনাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।

ওই সময় রাষ্ট্রপক্ষের সিএসআই আব্দুল আজিজ আইনজীবীদের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আসামি হানিফকে আদালত কক্ষ থেকে নয়, বাইরে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সম্পাদককে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে বলে জানান আসামির আইনজীবী রফিকুল ইসলাম।

এ ব্যাপারে জেলা মানবাধিকার কমিশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট প্রদীপ দে কৃষ্ণ বলেন, স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণকারী আসামিকে আদালত কক্ষ থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে দাবি করেন।

এ ব্যাপারে সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

সদর থানার ওসি মাজহারুল করিম জানান, আদালতের এজলাস থেকে ওই আসামিকে গ্রেপ্তার করার অভিযোগটি সত্য নয়। কালির বাজার ভবতারা মন্দিরের কাছ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।