‘স্বেচ্ছাচারিতা’র অবসান চান প্রশিকার কর্মীরা

প্রশিকার পরিচালনা পর্ষদের অভ্যন্তরীণ বিরোধের ফলে আটকে থাকা পাওনা পরিশোধের  দাবি জানিয়েছে বেসরকারি এই সংস্থাটির কর্মীরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 April 2015, 06:36 PM
Updated : 18 April 2015, 06:36 PM

একইসঙ্গে সাবেক পরিচালক কাজী ফারুক আহাম্মেদের বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ২১ মে থেকে প্রায় ১২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনেছে তারা।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে এ সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি তোলেন প্রশিকার কর্মীরা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রশিকার বর্তমান উপ-প্রধান নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম, পরিচালক মো. সিরাজুল হক, কামরুল হোসেন কামাল, উপ-পরিচালক কামরুজ্জামান ও মো. সোলায়মানসহ সংস্থাটির বিভিন্ন পর‌্যায়ের কর্মীরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপ-পরিচালক মো. ইনছার আলী পাশা।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রশিকায় গরিব মানুষের জমাকৃত সঞ্চয় ১৯০ কোটি টাকা এবং প্রশিকার কর্মরত পদত্যাগকৃত চাকুরিচ্যুত কর্মীদের বকেয়া বেতন ও কর্মীকল্যাণ তহবিলের ১৮০ কোটি টাকাসহ মোট ৩৭০ কোটি টাকার কোনো হদিস নেই। এই টাকা কোথায়, কীভাবে খরচ করেছেন করা হয়েছে তার কোনো হিসাব নেই।

এ অর্থ ব্যয়ের জন্য সরাসরি কাজী ফারুক আহম্মদকে দায়ী করা হয়।

“কাজী ফারুক আহম্মদ মনগড়া ও বাস্তবতাবিবর্জিত প্রশাসনিক, ঋণ ও সঞ্চয় নীতিমালা তৈরি করেন এবং গরিব মানুষের প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের জমাকৃত সঞ্চয় ফেরত না দিয়ে প্রতারণামূলক নিয়মনীতি প্রণয়ন করেন। এমনকি কর্মী ও গরিব মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করেন।”

২০০৯ সালে ‘ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন’ নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করে ‘চাবি’ প্রতীক নিয়ে খুলনা ও ঢাকা থেকে মোট তিনটি সংসদীয় আসনে নির্বাচনে অংশ নিয়ে হেরে যান কাজী ফারুক ।

এ হারের পরে দায়ভার প্রশিকার কর্মীদের উপর চাপিয়ে তাদের ২৫ শতাংশ বেতন কেটে নিয়ে কর্মীদের স্থাবর/অস্থাবর সম্পত্তি থেকে সংস্থা বকেয়া করতে পারবে এই মর্মে অঙ্গীকারনামায় তাদের স্বাক্ষর নেন। এছাড়া প্রশিকার কর্মএলাকাকে ২৬টি প্রশাসনিক অঞ্চলে ভাগ করে কাজী ফারুক নিজের পছন্দের লোক নিয়োগ করেন বলে দাবি করা হয়।

প্রশিকার উপ-পরিচালক রিজওয়ানুস শামীম রাজিব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের মূল সমস্যা কাজী ফারুক আহম্মদের স্বেচ্ছাচারী আচরণ। তিনি নিজের ইচ্ছামতো কাজ করছেন বলে সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার কারণে আমরা কোনো সরকারি সহযোগিতাও পাচ্ছি না। প্রচুর অনিয়মের কারণে বিদেশি দাতা সংস্থাগুলোর সাহায্য বন্ধ হয়ে আছে।

“হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী বৈধ গর্ভনিং বডি আমরাই। কিন্তু কাজী ফারুক আহমেদ ৩০ জনের মতো সন্ত্রাসী ভাড়া করে এনে অফিস দখল করে রেখেছেন। আমরা অফিসের ভেতরেই ছিলাম। কিন্তু অফিসে এখন কাজের পরিবেশ নেই বলে আজকে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছি।”

তিনি জানান, হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী বৈধ গর্ভনিং বডি হওয়া স্বত্ত্বেও অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর ওয়াক আউট করেন তারা। এর আগে বেশ কয়েকবার উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনা করে একটি গভর্নিং বডি তৈরির চেষ্টা চালানো হলেও কাজী ফারুকের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে তা সফল হয়নি।

এসব দাবি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আগে আগারগাঁওয়ে জাতীয় বিজ্ঞান ইনিস্টিটিউট জাদুঘরে ‘দূর্নীতি হটাও, প্রশিকা বাঁচাও’ স্লোগান নিয়ে ১২ দফা দাবি নিয়ে প্রশিকার ১৮০টি ফিল্ড অফিস ও প্রধান কার‌্যালয়ে প্রায় তিন হাজার কর্মী সমাবেশ করে বলে জানান রিজওয়ানুস শামীম।