হাসপাতালের পরিচালক একেএম নাসির উদ্দিন জানান, শনিবার দুপুরে রামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে একটি ঘটনার জের ধরে হাসপাতাল কর্মচারী ও শিক্ষার্থী দুপক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেছে।
এদিকে ঘটনার প্রতিবাদে দুপুরের পর থেকে হাসপাতালে কর্মবিরতি শুরু করেছেন কর্মচারীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে চিকিৎসকরা ওয়ার্ডে রাউন্ডে দেওয়ার সময় আল আমিন নামে মেডিকেল কলেজের এক শিক্ষার্থী তার এক আত্মীয় রোগীর পাশে বসে ছিলেন। এ সময় চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারি ওয়ার্ড বয় আনোয়ার হোসেন শিক্ষার্থী আল আমিনকে বের হয়ে যেতে বলেন।
আল আমিন নিজেকে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে ওয়ার্ডে রয়ে যান। এর পর দ্বিতীয় দফায় আল আমিনকে ওয়ার্ড থেকে বের হয়ে যেতে বলে আনোয়ার। কথা না শুনলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষার্থী আল আমিনকে জোর করে ওয়ার্ড থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করলে উভয়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও বাকবিতণ্ডা হয়।
পরে ক্যাম্পাসে ফিরে গিয়ে আল আমিন তার কয়েকজন সহপাঠী ডেকে নিয়ে ওই ওয়ার্ডে যান। খবর পেয়ে আগেই সেখানে উপস্থিত হন হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মাসুদ রানা, দপ্তর সম্পাদক আমিন ও সদস্য সরদার আবুল কালাম।
সেখানে উভয়পক্ষের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা তিন কর্মচারী ইউনিয়ন নেতা ও ওয়ার্ড বয় আনোয়ারকে পিটুনি দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কর্মচারী ইউনিয়ন সভাপতি মাসুদ রানা বলেন, কোনো চিকিৎসক ওয়ার্ডে রাউন্ড দিলে রোগীর সঙ্গে যাতে অতিরিক্ত কোনো স্বজন ওয়ার্ডে উপস্থিত না থাকেন সে বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা রয়েছে। আনোয়ার সে নির্দেশনাই পালন করছিলেন।
তিনি অভিযোগ করেন, “আমরা সেখানে গিয়েছিলাম সমস্যা সমাধান করতে। কিন্তু কিছু বুঝে ওঠার আগেই শিক্ষার্থীরা আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করে।”
ঘটনার প্রতিবাদে তারা কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান হাসপাতাল কর্মচারী ইউনিয়নের এই নেতা।
শিক্ষার্থী আল আমিন দাবি করেন, প্রথমে তাকে লাঞ্ছিত করে ওয়ার্ড থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করার জন্য গেলে সেখানে কর্মচারী ইউনিয়নের নেতাদের ক্ষমতার দাপটে দ্বিতীয় দফায় তার উপর হামলা চালানো হয়।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করা হবে বলে জানান হাসপাতালের পরিচালক একেএম নাসির উদ্দিন।