ভোটার আর নাছিরের মাঝে নেতাকর্মীর ‘দূরত্ব’

ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে নগরীর এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ছুটছেন মেয়র প্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দিন; কিন্তু মাঝখানে ‘ব্যবধান হয়ে দাঁড়িয়েছেন’ সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীরা।

মোস্তফা ইউসুফবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 April 2015, 03:57 PM
Updated : 17 April 2015, 06:29 PM

শুক্রবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সমর্থিত নাগরিক কমিটির প্রার্থী নাছিরের সঙ্গে ঘুরে এমন চিত্রই পাওয়া গেল।

প্রচারের শুরু থেকে প্রতিদিনই নির্বাচনী গণসংযোগের সময় নাছিরকে ঘিরে থাকতে দেখা গেছে দলীয় নেতাকর্মী-সমর্থকদের। ওই বেষ্টনী ডিঙিয়ে ভোটাররা ভিড়তে পারছেন না মেয়র প্রার্থীর কাছে; ‘মন খুলে’ বলতে পারছেন না নিজেদের প্রত্যাশার কথা।

শুক্রবার সকালে নগরীর আন্দরকিল্লার বাসা থেকে বেরিয়ে নাছির যখন পাথরঘাটার বান্ডেল সড়কে গাড়ি নিয়ে পৌঁছান, তখন তার সঙ্গে ছিলেন নগর কমিটির সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম বিএসসি ও সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আলম মাহমুদসহ আট-দশ জন।

বান্ডেল সড়কের নজুমিয়া লেইনে গাড়ি থামতেই স্থানীয় শ’ খানেক নেতাকর্মী নাছির ও অন্য নেতাদের ঘিরে স্লোগান দিতে শুরু করেন।

এ সময় নাছিরের সঙ্গে থাকা কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা হ্যান্ড মাইক নিয়ে বারবার নেতাকর্মীদের সরে যেতে অনুরোধ করেন। তবে কর্মী-সমর্থকরা তাতে কর্ণপাত করেননি।

মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক এ এইচ এম জিয়াউদ্দিন এ সময় মাইকে বলেন, “আপনারা যদি সত্যি নাছির ভাইয়ের ভালো চান তাহলে ভোটারদের কাছে যেতে তাকে সহযোগিতা করুন। চারপাশ থেকে তাকে ঘিরে ধরবেন না।”

ভিড় ঠেলে নাছির ও জ্যেষ্ঠ নেতারা অল্প কয়েকজন ভোটারের সাথে কথা বলেন। স্থানীয়রা মেয়র প্রার্থীর সঙ্গে কোলাকুলি করে এলাকার সমস্যার কথা বলেন। নির্বাচিত হলে সেসব সমাধানের আশ্বাস দেন নাছির।

নজু মিয়া লেইনের এক চা দোকানি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নেতাকর্মীরা তো সারা বছরই নাছির ভাইয়ের সাথে থাকেন। উনি দেখা করতে এসেছেন আমাদের সাথে। অথচ নেতাকর্মীদের কারণে উনার চেহারাও ভালো করে দেখতে পারলাম না। কিছু বলার ছিল, সে সুযোগও পেলাম না।”

এরপর পাথরঘাটায় হযরত আবদুল কাদের জিলানীর ‘হুজরা শরিফ’ জিয়ারত করেন নাছির। সেখান থেকে পাথরঘাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে যান এবং একটি মিনি ট্রাকে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেন।

এ সময় ট্রাকের সামনে ভিড় করে দাঁড়িয়ে ছিলেন দলের স্থানীয় কর্মী-সমর্থকরা।

ওই এলাকার বস্তির বাসিন্দাদের উদ্দেশে নাছির বলেন, “এখানে কেউ কেউ গুজব ছড়াচ্ছে আমি নির্বাচিত হলে বস্তি উচ্ছেদ করে বহুতল ভবন হবে। এটা মিথ্যা। বরং বস্তিবাসীর জীবনমানের উন্নয়ন হবে।”

পথসভায় বক্তব্য শেষ করেই টাইগার পাস রেলওয়ে কলোনি জামে মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে চলে যান নাছির।

নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর নাছিরের সঙ্গে ছিলেন ১৩ নম্বর পাহাড়তলি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মোহাম্মদ হোসেন হিরণ। হিরণের কর্মী সমর্থকদের এ সময় নাছিরকে ঘিরে থাকতে দেখা যায়।

এরপর ঝাউতলা কলোনিতে এক পথসভায় বক্তব্য দেন নাছির। সেখানে তিনি হিরণের জন্য ভোট চান। পরে হিরণও নাছিরের জন্য ভোট চান।

পথসভায় নাছির বলেন, “নগরীর প্রতিটি এলাকার কিছু স্বতন্ত্র সমস্যা আছে। নির্বাচিত হলে স্থানীয় গণ্যমান্যদের নিয়ে কমিটি করে সেসব সমস্যার সমাধান করা হবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে।” 

আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদও ঝাউতলা কলোনির পথসভায় বক্তব্য দেন।

ঝাউতলার সভা শেষে অন্য এলাকায় গণসংযোগে ছুটে যান নাছির। বিকালে নগর বাইশ মহল্লা মসজিদ কমিটির সঙ্গে সভা শেষ করে রাতে ফিরিঙ্গি বাজার এলাকায় গণসংযোগ করেন।